শনিবার আরজি কর মামলায় রায় ঘোষণা (RG Kar Case Verdict) করল শিয়ালদহ আদালত। দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়। আগামী সোমবার সাজা ঘোষণা করবে আদালত। যদিও এদিনও সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছে। তার বক্তব্য, এই কাজ একার পক্ষে করার সম্ভব নয়।
সঞ্জয় রায়কে কাঠগড়ায় তোলা হলে বিচারক তার কাছে জানতে চান, এই আদালতের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে কোনও স্থগিতাদেশ রয়েছে কিনা। সঞ্জয়ের আইনজীবী জানান কোনও স্থগিতাদেশ নেই।
এরপর বিচারক সঞ্জয়কে বলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এতে ১০ বছর বা ২৫ বছরের জেল, আমৃত্যু কারাবাস এমনকী মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ২০ জানুয়ারি সাজা ঘোষণা করা হবে।
সঞ্জয় রায়ের কিছু বলার রয়েছে কিনা জানতে চান বিচারক অনির্বাণ দাস। এরপরই তাৎপর্যপূর্ণ উত্তর দেন খুন ধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়, বলেন, ‘আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। ধস্তাধস্তিতে তা ছিঁড়ে যেতে পারত। যাঁরা যাঁরা এই ঘটনায় যুক্ত তাঁদের কেন ছেড়ে দেওয়া হল? প্রশ্ন তোলেন সঞ্জয়। বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে স্যার’।
পাল্টা বিচারক জানিয়ে দেন, ‘সিবিআই আপনার বিরূদ্ধে যে যে অভিযোগ এনেছে, যাবতীয় তথ্যপ্রমাণের পরিপ্রেক্ষিতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আপনার বাকি কথা সোমবার শোনা হবে।’
বস্তুত, গত বছরের ৯ আগস্ট। কলকাতার আরজি কর হাসপাতালের (RG Kar Rape and Murder Case) নারকীয় ঘটনাটি প্রকাশ্যে এসেছিল। ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল হাসপাতালেরই তরুণী চিকিৎসককে। শনিবার সেই মামলায় রায় ঘোষণা করল শিয়ালদহ আদালত। মূল ঘটনার ৫ মাস ৯ দিন পর রায়দান হল।
আরজি কর হাসপাতালের ভিতরেই কর্মরত অবস্থায় ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল ডাক্তারির পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ছাত্রীকে। গত ১১ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে শুরু হয় এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া। অবশেষে শনিবার আরজি করের চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের মামলার রায়দান করল শিয়ালদহ কোর্ট।
নির্যাতিতার বাবা-মা অবশ্য সিবিআই তদন্তে খুব একটা খুশি হতে পারেননি। তাঁরা দাবি করে এসেছেন যে, এই ঘটনা সঞ্জয় রায়ের একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। সিবিআই মূল দোষীদের আড়াল করছে বলেও সন্দেহ করেছেন তাঁরা।
এছাড়া প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের একাংশও মনে করে, এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত। কিন্তু সিবিআই মনে করেছে, সঞ্জয় একাই দোষী। আর তাঁদের একাধিক রিপোর্টেও বলা হয়েছে যে এই কাজ কারও একার পক্ষে করা সম্ভব।