Ration Scam সাত সকালে বাড়ি ঘিরল ইডি, ট্রাকচালক বারিক কী ভাবে হয়ে উঠলেন জ্যোতিপ্রিয় ‘ঘনিষ্ঠ’?

0
159

২০১৫ সালে আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে সোনা-সহ গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দফতর। জেলে গিয়েছিলেন। পরে জামিন পেয়ে একাধিক ব্যবসা শুরু করেন।

দেশেরসময়, বসিরহাট: রেশন দুর্নীতি মামলায় ফের ময়দানে তেড়েফুঁড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি । উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গায় একযোগে তল্লাশি শুরু করেছে ইডি। প্রায় ৪০ জন অফিসারের একটি টিম নিয়ে তল্লাশি চলছে। টিমে রয়েছেন মহিলা অফিসারও। সিআরপিএফ ও বিএসএফ নিয়ে তল্লাশি চলছে। বসিরহাট ও বেড়াচাপার কাউকেপাড়ায় অভিযানে তদন্তকারীরা।

বসিরহাটের সংগ্রামপুরে আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বাড়ি। এদিন ভোরের আলো ফোটার আগেই সেখানে হাজির হয় ইডির একটি বিরাট দল। ৯ জন ইডি আধিকারিক তল্লাশি শুরু করেছেন।
আব্দুল বারিকের প্রাসাদোপম বাড়ি। সেই বাড়ি ঘিরে ফেলেন জওয়ানরা।

গরু ও কয়লা পাচার মামলায় একাধিকবার নাম জড়ায় এই আব্দুল বারিক বিশ্বাসের। সিআইডি এর হাতে গ্রেফতারও হন তিনি। অন্যদিকে সোনা পাচার মামলায় ৯ বছর আগে আব্দুল বারিক বিশ্বাস গ্রেফতার হয়েছিলেন।

সূত্রের খবর, সেই আব্দুল বারিক এবার রেশন দুর্নীতি মামলায় তদন্তকারীদের স্ক্যানারে। তাঁর বাড়ির পাশেই একটি রাইস মিল রয়েছে। সেখানেও পৌঁছয় ইডির আধিকারিকরা।

প্রাসাদোপম এই বাড়িতে একাধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। পুরো বাড়ি চতুর্দিক ঘিরে ফেলেছে বিএসএফ। ঠিক ভোর ৫টায় আব্দুল বারিক বিশ্বাসের বাড়িতে ঢোকে ইডি। ভোর রাত ৩.৪৫ নাগাদ তাঁর বাড়ির সামনে এসে পৌঁছয় ইডি গোয়েন্দারা। সংগ্রামপুর অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি রাইস মিলে শুরু করেছে ইডি। রাইস মিলের কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন ইডি গোয়েন্দারা।

অন্যদিকেদেগঙ্গা ব্লকের বেড়াচাপায় পিজি হাই টেক রাইস মিলেও ইডির হানা। রাইস মিল ও মালিকের প্রাসাদসমান বাড়ি ঘিরে ফেলেছে সিআরপিএফ। নিউটাউনে মুকুল শান্তি গার্ডেনেও চলছে তল্লাশি। এটি আব্দুল বারিকের ফ্ল্যাট I

সূত্রের দাবি, রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বারিক। সংগ্রামপুরে বারিকের বাড়ি লাগোয়াই রয়েছে তাঁর চালকল। সেখানেও তল্লাশি চালাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। অধুনা চালকল মালিক এই বারিকের বিরুদ্ধে অতীতেও বিস্তর অভিযোগ উঠে এসেছিল। এমনকি গ্রেফতার হয়ে জেলেও যেতে হয়েছিল।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, বর্তমানে পেশায় ব্যবসায়ী বারিক এককালে ছিলেন ট্রাকচালক। সেই সময় গরু পাচারের কাজে ব্যবহৃত হত বসিরহাটের একাধিক ‘করিডর’। বসিরহাটের স্বরূপনগর থেকে শুরু করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা জুড়ে চলত পাচারের কারবার।সূ

ত্রের খবর, ট্রাক চালানোর সুবাদেই পাচারকারীদের সঙ্গেও যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল তাঁর। কোথা থেকে গরু আনা হত, কোথা থেকে সীমান্ত পার করতে হত, বাংলাদেশে কারা সেই গরু কিনতেন, সীমান্তে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হত এই কারবারের সঙ্গে, সে সব তথ্যও জেনে নিয়েছিলেন। এ ভাবেই ধীরে ধীরে নিজের পরিধি বর্ধিত করতে শুরু করেছিলেন তিনি। এর পর শুরু করেন নিজের ‘সাম্রাজ্য’ তৈরির প্রস্তুতি। কানাঘুষো শোনা যায়, এক সময়ে শুধু বসিরহাট বা বনগাঁ এলাকাতেই নয়, গোটা রাজ্যেই সীমান্তবর্তী এলাকায় পাচারের কারবারে অন্যতম বড় নাম হয়ে উঠে আসেন আব্দুল বারিক।

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বারিকের বিরুদ্ধে যে বেআইনি কারবারের অভিযোগ উঠেছিল, তার মধ্যে অন্যতম সোনা পাচারের অভিযোগ। ২০১৫ সালে প্রচুর সোনা-সহ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল শুল্ক দফতর। কয়েক বছরের জন্য জেলেও গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান। জেল-মুক্তির পর অবশ্য ‘ভাবমূর্তি’-তে কিছুটা বদল আনার চেষ্টা করেন তিনি। পাচারের কারবারের বদলে শুরু করেন একাধিক ব্যবসা। ইট ভাটা, কয়লা, ট্রাকের ব্যবসা শুরু করেন। এমনকি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও চালু করেন। এর পর ধীরে ধীরে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বারিকের। বিভিন্ন রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে, নেতাদের সঙ্গে দেখা যেতে থাকে তাঁকে। সূত্রের দাবি, সেই সময়েই জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ তৈরি হয় বারিকের।

Previous articleMamata Banerjeeআসুক বাংলা ভাগ করতে, দেখি কার কত ক্ষমতা: হুঁশিয়ারি মমতার
Next articleAnubrata Mondal দু’বছর হাজতবাসের পর অনুব্রত মণ্ডল সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেলেন শীর্ষ আদালতে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here