বনগাঁয় একাধিক আটা এবং চালকলে হানা দিল ইডি! রেশনকাণ্ডে যোগ খতিয়ে দেখতে জেরা মালিকদেরও
দেশের সময় বনগাঁ: ED Raid: . বনগাঁর বিভিন্ন চাল এবং আটাকলে হানা দিল ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলার তদন্তেই এই অভিযান। শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার নানা প্রান্তে অভিযান চালিয়েছে ইডি। সকালে কালুপুরের রাধাকৃষ্ণ আটাকল এবং রাধাকৃষ্ণ চালকলে যান তদন্তকারীরা। জানা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট চালকল এবং আটাকলের মালিক মন্টু সাহা এবং কালীদাস সাহা। তাঁদের বাড়িতেও গিয়েছে ইডি। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
বিপুল পরিমাণ বাজেয়াপ্ত হওয়া গম পাঠানো হয়েছিল বেড়াচাঁপায় বাকিবুরের চালকল-সহ মোট চারটি মিলে। সেই তালিকায় ছিল বনগাঁর এই রাধাকৃষ্ণ আটা মিলও। বাজেয়াপ্ত গমের মধ্যে ১ হাজার ৬৫২ মেট্রিক টন পাঠানো হয়েছিল বনগাঁর কলুপুরের এই আটাকলে। দেখুন ভিডিও
রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডি আসরে নামতেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে শুরু করেছে। শনিবার সাত সকালে বনগাঁর রাধাকৃষ্ণ আটাকলে হানা দিয়েছেন ইডির তদন্তকারী অফিসাররা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে ইডি পৌঁছে গিয়েছে বনগাঁর কলুপুরের ওই আটাকলে। এই আটাকল ও আটাকলের মালিকের বাড়িতে, দুই জায়গাতেই একইসঙ্গে চলছে ইডির তল্লাশি অভিযান। আর এসবের মধ্যেই উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাচারের পথে বাজেয়াপ্ত হওয়া গম শুধু বাকিবুরের রাইস মিলেই নয়, সেই গম গিয়েছিল বনগাঁর এই আটাকলেও।
বছর কয়েক আগেকার কথা। ২০২০ সালের অক্টোবরে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছিল প্রচুর ট্রাক ভর্তি গম। সব মিলিয়ে ১৭৫টি ট্রাক থেকে ৫ হাজার ১০১ মেট্রিক টন গম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই টন টন গম বাংলাদেশে পাচারের ছক ছিল। তবে তার আগেই বসিরহাট থানার পুলিশের তৎপরতায় সেই বিপুল পরিমাণ গম বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। এরপর সেই বিপুল পরিমাণ বাজেয়াপ্ত হওয়া গম পাঠানো হয়েছিল বেড়াচাঁপায় বাকিবুরের চালকল-সহ মোট চারটি মিলে। সেই তালিকায় ছিল বনগাঁর এই রাধাকৃষ্ণ আটা মিলও। বাজেয়াপ্ত গমের মধ্যে ১ হাজার ৬৫২ মেট্রিক টন পাঠানো হয়েছিল বনগাঁর কলুপুরের এই আটাকলে।
জানা যাচ্ছে, এই রাধাকৃষ্ণ আটাকলের মালিক মন্টু দাস। রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে এই রাধাকৃষ্ণ আটাকলের মালিকের বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল বলেই সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। ইডি সূত্রের দাবি, রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং বাকিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই বনগাঁর কলুপুরের এই আটাকলের তথ্য পান ইডির তদন্তকারী অফিসাররা। সেই সূত্র ধরেই শনিবার সকালে বনগাঁর আটাকলে ইডির হানা বলে সূত্রের খবর।
এখনও পর্যন্ত যে নথি সংবাদমাধ্যমের সামনে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বসিরহাট থানার পুলিশ ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর ওই বিপুল পরিমাণ গম বাজেয়াপ্ত করেছিল। এরপর রাজ্য সরকারের খাদ্য ও গণবণ্টন দফতরের নথিটি ইস্যু করা হয়েছিল ৩১ অক্টোবর। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, বাকিবুরের এনপিজি রাইস মিল, রাধাকৃষ্ণ আটাকল মিলিয়ে মোট চারটি জায়গায় ওই বাজেয়াপ্ত হওয়া গম পাঠানো হয়েছিল। পুলিশি অভিযানে বাজেয়াপ্ত গমের সিংহভাগই পাঠানো হয়েছিল বাকিবুরের রাইস মিলে ও বনগাঁর এই আটাকলে।
তবে শুধু বনগাঁর এই আটাকলেই নয়, এর পাশাপাশি রাজ্যের আরও একাধিক জায়গায় ইডির তদন্তকারী অফিসাররা একযোগে হানা দিয়েছেন ইডির তদন্তকারী অফিসাররা। শনিবার রাজ্যের মোট সাত জায়গায় ইডির অফিসারদের পৃথক পৃথক টিম তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে।