দেশের সময়: ৯ দিনের জন্য মাসির বাড়ি এসেছেন ‘নীলমাধব’। ৫০ ফুট উচ্চতার ১২৫ টনের লোহার রথে চেপে গুন্ডিবাটিতে এসেছেন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা। কথিত আছে, সাধক ধ্রুবানন্দ সপ্নাদেশ পেয়েই গঙ্গায় ভেসে আসা নিম কাঠ দিয়ে তৈরি করেছিলেন দেবমূর্তি। পরবর্তীতে শ্রীচৈতন্যদেব যার নামকরণ করেছিলেন ‘নবনীলাচল’।
মাহেশের রথযাত্রার ইতিহাস ছ’শো বছরেরও পুরনো। প্রথমে কাঠের রথে চেপেই মাসির বাড়ি যেতেন জগন্নাথ। ১৮৪৪ সালে সেই রথে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুড়ে যায় রথ। পরবর্তীতে শ্রীরামপুরে জগন্নাথ দর্শন করতে এসে নতুন রথ নির্মাণে উদ্যোগী হন কোম্পানির দেওয়ান শ্যামবাজারের বসু পরিবারের গৃহকর্তা কৃষ্ণচন্দ্র বসু।
দায়িত্ব দেওয়া হয় বিখ্যাত ব্রিটিশ কোম্পানি মার্টিন বার্ন লিমিটেডকে। এক বছরের মধ্যেই তৈরি হয় লোহার রথ। জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার জন্য এই ‘যান’ তৈরি করতে খরচ হয়েছিল আনুমানিক ২০ হাজার টাকা। ১৮৫৫ সালে প্রথম সেই লোহার রথে চেপেই মাহেশ থেকে মাসির বাড়ি আসেন ‘নবনীলাচল’। সেই থেকে আজ পর্যন্ত শতাব্দী প্রাচীন ১২ চাকা বিশিষ্ট রথে চেপেই মাসির বাড়ি আসেন জগন্নাথ। দেখুন ভিডিও
এবার ৬২৭ বছরে পদার্পণ করল শ্রীরামপুরের মাহেশের রথ। মঙ্গলবার মাহেশের জগন্নাথ মন্দির থেকে বেরিয়ে ফায়ার ব্রিগেড মোড়, পেট্রল পাম্প হয়ে মাসিরবাড়ি ৷ এখন সেখানেই রয়েছেন জগন্নাথদেব ৷ সঙ্গে বলরাম এবং সুভদ্রা। সেখানে দেব দর্শনে উপচে পড়ছে ভিড়| বিশাল মেলাও বসেছে ৷ মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা ছাড়াও রয়েছেন রাধাকৃষ্ণ ও গোপাল ৷ তাঁদের নিত্যসেবা হয় ৷
শুক্লা অমাবস্যার দ্বিতীয়া তিথিতে ভোর ৫টায় মঙ্গলারতি থেকেই মাহেশের রথযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হযেছিল। সকালে ভোগ প্রদানের পর রত্নবেদী থেকে মন্দিরের চাতালে নামিয়ে আনা হয় জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহ। সেখানে ভক্তদের দর্শনের পর দুপুরে বিগ্রহ নিয়ে আসা হয় রথে। সবার প্রথমে রথে ওঠেন নারায়ণ। এর পর বিকেলে রথের রশিতে টান পড়ে। শ্রীরামপুরের রথ উপলক্ষে মাহেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয় প্রতিবছর| এবার ব্যতিক্রম হয়নি ৷
মাসিরবাড়ির সামনেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে সুসজ্জিত ৫০ ফুটের রথটি ৷ এই রথে চেপেই নীলমাধব আবার মন্দিরে ফিরবেন ৷