
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঘটনার সূত্রপাত কি গত পুরসভা নির্বাচনের পর? এই প্রশ্নের সঙ্গে উঠে আসছে শাসকদলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টিও।
রামপুরহাট হত্যকাণ্ডের পর যা ভাবাচ্ছে পুলিশকে। গোটা ঘটনায় পঞ্চায়েতের এক উপ প্রধানের মৃত্যু ছাড়াও আট জনের মৃত্যু হয়েছে। বোমাবাজি এবং পরবর্তী সময়ে অগ্নিসংযোগের জেরেই এই মৃত্যু বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার তদন্তে রাজ্য সরকার এডিজি (সিআইডি) জ্ঞানবন্ত সিংয়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট তৈরি করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, নিহত বরশাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ গত পুরসভা নির্বাচনে রামপুরহাট পুরসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। দলেরই একটি গোষ্ঠীর হয়ে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। যার জন্য অপর একটি গোষ্ঠীর চক্ষুশূল হন।
পরবর্তী সময়ে যত দিন যেতে থাকে ততই এই বিদ্বেষ বাড়তে থাকে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশের মনে প্রশ্ন জেগেছে সেই বিদ্বেষের সঙ্গে ভাদু শেখের খুনের কোনও সম্পর্ক আছে কি নেই।

সোমবার রাতে দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমার আঘাতে ভাদুর মৃত্যুর পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বগটুই গ্রাম। পরপর বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
যে সমস্ত বাড়িগুলিতে আগুন লাগানো হয়েছে তাঁরা ভাদু শেখের আত্মীয় এবং এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বলে পরিচিত হলেও রাজনৈতিকভাবে ভাদুর বিপরীত মেরুতে অবস্থান করতেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও ভাদু খুনের বদলা নিতেই পাল্টা অগ্নিসংযোগ কি না সেবিষয়ে পুলিশ সরকারিভাবে এখনও কিছু জানায়নি।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এডিজি (পশ্চিমাঞ্চল) সঞ্জয় সিং-সহ অন্যান্য পুলিশ কর্তারাও গেছেন ঘটনাস্থলে।

রামপুরহাট-কাণ্ডের ঘটনায় সিপিএম, বিজেপি বা অন্য দল যেই জড়িত থাকুক ছাড়া পাবে না। এমনকি তৃণমূলের কেউ জড়িত থাকলে, ছাড় দেওয়া হবে না তাঁদেরও। বীরভূমের রামপুরহাটে পৌঁছে এমন মন্তব্যই করলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে পাশে বসিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘তৃণমূলের বদনাম করার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বড় চক্রান্তের নিদর্শন। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।’’রাজ্য সরকারকে বদনাম করতেই এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ফিরহাদ। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িত কাউকেই ছাড়া হবে না।

রাজ্য সরকারকে বদনাম করতেই এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ফিরহাদ।ফিরহাদ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের লোককেই প্রথমে মারবে। তার পর আমাদের লোকদেরই আগুনে পুড়িয়ে মারা হবে। এই ঘটনা সহ্য করা যাবে না। পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সঠিক তদন্ত করার জন্য। রাজ্য পুলিশের ডিজি রামপুরহাট আসছেন। ডিজিকে বলেছি আপরাধীদের খুঁজে বার করতে হবে। সবার উপরে আইন রয়েছে।

রামপুরহাট-কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ৮ জন মারা গিয়েছেন এবং তিনটি বাড়ি পোড়ানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ফিরহাদ। পাশাপাশি, তিনি ভাদু শেখের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘সিটের তদন্তের উপর ভরসা আছে তদন্ত চলছে। ঘটনায় জড়িত কাউকেই ছাড়া হবে না।।’’
