দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বগটুইয়ের ঘটনার পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মঙ্গলবার সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তা আরও স্পষ্ট করে বোঝাতে চাইলেন তিনি। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার তিনি রামপুরহাটে যাবেন।
বগটুইয়ে বৃহস্পতিবার যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা সরকারে। আমরা কি চাই কোথাও কেউ বোমা মারুক! বদনামের চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কেউ ছাড়া পাবে না। ঘটনার পর আমি ৫০ বার ফোন করেছি। ওসি ও এসডিপিও-কে সরিয়ে দিয়েছি। সিট গঠন করেছি। ফিরহাদ হাকিমকে পাঠিয়েছিলাম। আজই যেতাম। কিন্তু বিরোধীরা গেছেন। আগামিকাল আমি যাচ্ছি।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘আমি সিপিএম, কংগ্রেসের মতো চক্রান্তকারী দল নই।’’
আগামীকাল রামপুরহাট যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি ইনডোর থেকে বুধবার একথা বলেন তিনি।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে আবার কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘লাট সাহেব’ বলে কটাক্ষ করে তাঁর মন্তব্য, সর্বদা রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নেই বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু নিজে দিব্যি ‘ঘুরে বেড়ান’। বুধবার চিঠিতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা থেকে রামপুরহাট-কাণ্ডে সিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল। অন্য দিকে, একটি সরকারি সভা থেকে পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা করলেন মমতা। তিনি জানান বিজেপি শাসিত রাজ্যে এর চেয়ে অনেক হিংসার ঘটনা ঘটে। তার মানে এটাও নয় যে তাঁরা ওই উদাহরণ দিয়ে রামপুরহাটের ঘটনাকে সমর্থন করছেন। রামপুরহাটের বগটুইয়ের ঘটনায় দোষীরা শাস্তি পাবেন। নিরপেক্ষ ভাবেই তদন্ত হবে বলে দাবি করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা আইনমন্ত্রী।
বগটুইয়ের মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে বুধবার সকালে সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দল নিয়ে বাগটুইয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তাঁদের উদ্দেশ করে মমতা এদিন বলেন, আমি আজকেই যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আরও অনেকে আজ গেছে। তারা এখন ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে ল্যাংচামহলে পৌঁছে গেছে। তার পর ল্যাংচা খেয়ে আসানসোল হয়ে রামপুরহাটে যাবে। এর পর গেলে রাত হয়ে যাবে, তাই আমি এদিন গেলাম না। তবে বলে রাখলাম কেউ রেহাই পাবে না। রামপুরহাটের ঘটনা নিয়ে অ্যাকশন হবে।
তবে এ সবের উর্ধ্বে একটা বিষয় স্পষ্ট যে বাগটুইয়ের ঘটনার জন্য প্রকারান্তরে বিজেপি তথা বিরোধীদের উপরেই দায় চাপাতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট করেই বলেন, “আসলে দাঙ্গা করতে পারছে না। লোকে খেতে পারছে না, তাও বলতে পারছে না। মেয়েরা পড়াশুনা করতে পারছে না, এ কথা বলতে পারছে না। মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না, এ কথা বলতে পারছে না। তাই দেশলাই জ্বালানো খুব সহজ তাই না!
এই দেশলাই জ্বালাতে চক্রান্তকারীদের জুড়ি নেই। কিন্তু তারা বোঝে না অন্যের ঘরে দেশলাই জ্বালালে নিজের ঘরে এসেও পড়তে পারে। অনেক নষ্টামি, অনেক দুষ্টুমি দেখছি। কালকেও দেখেছেন গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, পেট্রোলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এটা নিয়ে যাতে কেউ বলতে না পারে, তাই হট করে একটা ঘটনা ঘটিয়ে দিচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছেন। কে দেশলাই জ্বালিয়েছে সবাই জানে। গৃহদাহ শুরু হয়েছে, ঘর পুড়ছে তাই দিশেহারা তৃণমূল।