দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ এক বছর একটানা আন্দোলনের শেষে জয় পেয়েছেন কৃষকরা। বিতর্কিত তিন কৃষিবিল প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রের অনড় অবস্থান থেকে সরে কৃষকদের অনুরোধ করেছেন, নতুন করে শুরু করতে, চাষবাসে ফিরতে। আজ সকালে এই ঘোষণার পর থেকেই আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে কৃষকদের মধ্যে। প্রশংসায় মুখর বিরোধী শিবিরও।
এদিন কৃষিবিল প্রত্যাহারের খবর সামনে আসার পরেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। বিরোধী নেতা লিখেছেন, “দেশের অন্নদাতারা সত্যাগ্রহ করে অহংকারের মাথা নত করালেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই জয়ে অভিনন্দন! জয় হিন্দ, জয় হিন্দের কৃষক!”
देश के अन्नदाता ने सत्याग्रह से अहंकार का सर झुका दिया।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) November 19, 2021
अन्याय के खिलाफ़ ये जीत मुबारक हो!
जय हिंद, जय हिंद का किसान!#FarmersProtest https://t.co/enrWm6f3Sq
দেশের অন্নদাতাদের সত্যাগ্রহের সামনে অহঙ্কারকে মাথা নত করতে হল৷ নরেন্দ্র মোদি তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করার পর এ ভাবেই কেন্দ্রকে কটাক্ষ করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ৷ অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই জয়ের জন্য কৃষকদের অভিনন্দনও জানিয়েছেন তিনি৷
একই সঙ্গে নিজের পুরনো একটি মন্তব্যও ট্যুইট করেছেন কংগ্রেস নেতা৷ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের সেই ভিডিও-তে রাহুল গান্ধিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘আমার কথা মিলিয়ে নেবেন৷ সরকার কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হবে৷’
देश के अन्नदाता ने सत्याग्रह से अहंकार का सर झुका दिया।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) November 19, 2021
अन्याय के खिलाफ़ ये जीत मुबारक हो!
जय हिंद, जय हिंद का किसान!#FarmersProtest https://t.co/enrWm6f3Sq
একা রাহুল গান্ধি নন, প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণার পর কৃষকদের অভিনন্দন জানিয়ে ট্যুইট করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালও৷ ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘তিন কৃষি আইনই প্রত্যাহার করা হচ্ছে৷ সাতশোর বেশি কৃষক শহিদ হয়েছেন৷ তাঁকে বলিদান অমর থাকবে৷ আগামী প্রজন্ম মনে রাখবে, দেশের কৃষকরা কীভাবে নিজেদের প্রাণ বাজি রেখে কৃষি কাজ এবং কৃষকদের বাঁচিয়েছিলেন৷ আমার দেশের কৃষকদের আমার প্রণাম৷’
সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব অবশ্য দাবি করেছেন, উত্তরপ্রদেশে তাদের দলের উদ্যোগে পূর্বাঞ্চল বিজয় যাত্রার আগে ভয় পেয়েই তিন আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘বড়লোকদের বিজেপি জমি অধিগ্রহণ এবং কালো আইন দিয়ে কৃষকদের ঠকাতে চেয়েছিল৷ বিজেপি বলুক, কয়েকশো কৃষকের মৃত্যুর জন্য দোষীদের শাস্তি কবে হবে?’ বিসএপি নেত্রী মায়াবতীর মতে, সরকার আগেই এই সিদ্ধান্ত নিলে এত অশান্তি, প্রাণহানির থেকে বাঁচত দেশ৷ শিবসেনার প্রতিক্রিয়া, সাত বছরের শাসনকালে প্রথমবার দেশের মনের কথা শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷
এদিন কৃষিবিল প্রত্যাহারের পরেই টুইট করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, “প্রতিটি কৃষককে আন্তরিক অভিনন্দন। বিজেপির নিষ্ঠুরতার কাছে কোনওভাবেই মাথা না নুইয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গেছেন তাঁরা। এটাই সবচেয়ে বড় জয়। এই যুদ্ধে যাঁদের প্রিয়জন চলে গেছেন, তাঁদের সান্ত্বনা জানাই।”
My heartfelt congratulations to every single farmer who fought relentlessly and were not fazed by the cruelty with which @BJP4India treated you. This is YOUR VICTORY!
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 19, 2021
My deepest condolences to everyone who lost their loved ones in this fight.#FarmLaws
এদিন দেশবাসীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন মোদী। তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। হয়তো আমাদের তপস্যাতেই খামতি ছিল, তাই কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এই মাসে শুরু হতে চলা সংসদ অধিবেশনে এই কৃষি আইন প্রত্যাহার করব। এবার আপনারা সকলে খেতে ফিরে যান, পরিবারের মধ্যে ফিরে যান।’
শুক্রবার, গুরু নানকের জন্মদিবস। এমন দিনে মোদীর এই ঘোষণা ঘিরে আলোড়ন রাজনীতির অন্দরে। অনেকেই মনে করছেন, দিল্লি-পঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলনের ফলশ্রুতি হিসেবে পাওয়া এই সাফল্যের পেছনে ভোটব্যাঙ্কের সমীকরণ রয়েছে স্পষ্টতই।
আগামী বছরের গোড়াতেই ওই পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। শিখ এবং জাঠ জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ এই আন্দোলনে সামিল ছিলেন। এই সাফল্য তাঁদের মোদী-মুখী করে কিনা, সেটাই এখন দেখার। তবে পঞ্জাব নির্বাচনের আগে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে জোট গড়ার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ বড় হতে চলেছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।