কলকাতা : সোমবার দুপুর গড়িয়ে-মঙ্গল স্তব্ধ টলিপাড়া। সপ্তাহের প্রথম দুদিনই তালা ঝুলল সিনেপাড়ায়। টলিপাড়ায় কাজ বন্ধ। পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে শুরু হওয়া বচসার জেরে বন্ধ রয়েছে শুটিং। পরিচালক বনাম টেকনিশিয়ান-ফেডারেশন নিয়ে যে জলঘোলা হয়েছে সোমবার দিনভর ।সোমবার দুপুর থেকে পরিচালক-প্রযোজক এবং ফেডারেশন, টেকনিশিয়ানরা সারলেন বৈঠক দফায় দফায়। তবু মেলেনি রফাসূত্র। তারই সমাধান সূত্র খুঁজতে নবান্নতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব ও গৌতম ঘোষকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার দুপুরে নবান্নে গেলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব, গৌতম ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও। তার পরই নিজের ‘এক্স’ হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি পোস্ট করেন সাংসদ-অভিনেতা দেব। সঙ্গে আশ্বাস, “আশা করি সন্ধ্যার মধ্যেই সমাধান হয়ে যাবে।”
দেব লেখেন, ‘‘খুব শীঘ্রই সব কিছু মিটে যাবে। সন্ধ্যার মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। আশা করছি, বুধবার থেকেই শুরু হবে শুটিং। টেকনিশিয়ান, প্রযোজক থেকে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ।’’
সোমবার দুপুরে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকে বসেন পরিচালকেরা। তার পর বিকেলে টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ানস স্টুডিয়োয় সাংবাদিক বৈঠক করে ফেডারেশন। সন্ধ্যায় সেখানেই পাল্টা বৈঠকে বসে ডিরেক্টর্স গিল্ড। পরিচালকদের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, রাজ চক্রবর্তী-সহ অনেকেই।
https://x.com/idevadhikari/status/1818230790645289453?t=Ykb74CQSWK6NLWX488WPMQ&s=19
পরিচালকদের অভিযোগ, ফেডারেশন ইচ্ছে মতো একতরফা আইন তৈরি করে। ফলে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে কাজের পরিসর ক্রমশ কমছে। ফিরে যাচ্ছেন বলিউডের বহু নির্মাতা। অন্য দিকে ফেডারেশনের তরফে অভিযোগ ছিল, পরিচালকদের একাংশ ‘ষড়যন্ত্র’ করে সোমবার শুটিং বন্ধ করেছেন।
এই প্রসঙ্গে অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, “পরিচালকেরা কাজে আসেননি। কিন্তু আমরা অন্য কোনও বিভাগকে কাজে না আসার জন্য অনুরোধ করিনি।” এই পরিস্থিতিতে সব পক্ষই চাইছিলেন তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ। সোমবার রাতে পরিচালকেরা বলেছিলেন, আইনজ্ঞ ও সিনেমা বোঝেন এমন কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা চান তাঁরা। তার আগে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈঠকের পর রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছিলেন তাঁরা। তবে শেষ পর্যন্ত সমাধানের কী সূত্র মিলল, তার অপেক্ষায় টলিপাড়া।
দেবের পোস্টের পরই আশা দেখছে সকলে। তাহলে নিঃসন্দেহে মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন কোনও রাস্তা দেখাতে পেরেছেন, যার হাত ধরে নতুন করে সবটা শুরু করা যাবে রাত পোহালেই। তবে কী সেই সিদ্ধান্ত, রাহুল মুখোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে তা কী হতে চলেছেন, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এখনও মেলেনি। এই মিটিং থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কোন বার্তা দিয়েছেন, তাও স্পষ্ট হয়নি এখনও। ফলে অনেকেই আগ্রহের সঙ্গে বসে রয়েছেন জানার জন্য ঠিক কোন পথে সমাধান করা হল, আর যদি ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে নিয়মে কোনও পরিবর্তন আসছে কি না, তাও এখনও স্পষ্ট নয়।