গত ২৩ এপ্রিল (পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পরদিন) পঞ্জাবের পঠানকোটে কর্মরত অবস্থায় ভুল করে পাকিস্তানে ঢুকে গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন পূর্ণমকুমার সাউ। তখনই পাক রেঞ্জার্স তাঁকে ধরে। বুধবার তাঁকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান।

‘ভুল করে’ সীমান্ত পার করে পাক সীমান্তে ঢুকে পড়েছিলেন ভারতের বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম সাউ (BSF Jawan Purnam Shaw)। ভারত-পাক অশান্তির আবহে তাঁকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স (Pakistan Rangers)। তারপর থেকে পাক সেনার হাতেই বন্দি ছিলেন পূর্ণম। তাঁর দেশে ফেরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল গোটা দেশ। সোমবার দু’দেশের সংঘর্ষ বিরতির পরে পূর্ণমের দেশে ফেরা নিয়ে ফের আশার আলো দেখতে শুরু করে দেশবাসী। অবশেষে আজ, বুধবার সকালে খবর এল, মুক্তি পেলেন পূর্ণম।

পহেলগামের জঙ্গিহানার ঘটনার পর জঙ্গি নিধনে কড়া পদক্ষেপ করে ভারত। সীমান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে ভুল করে পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্ত টপকে যান বিএসএফের ১৮২ নং ব্যাটেলিয়নের সদস্য কনস্টেবল পিকে সাউ। তিনি আবার বাংলার হুগলির বাসিন্দা। সেই ঘটনার ২০-রও বেশি দিন পর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফিরলেন ওই জওয়ান।

ভুলবশত সেনা জওয়ান বা সাধারণ মানুষের সীমান্ত পেরনোর ঘটনা আগেও হয়েছে। প্রোটোকল অনুযায়ী, ফ্ল্যাগ বৈঠকের পর এমন সমস্যার সমাধান হয়। আটক করা হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, কাশ্মীরের পহেলগামের কাণ্ডের পর পাকিস্তানের প্রতি কঠোর অবস্থান নেয় ভারত। পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয় পাকিস্তানও। দুই দেশের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই জওয়ানের মুক্তি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন মহলে।
জওয়ানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে তিনবার ফ্ল্যাগ মিটিং করেছিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF)। তবে সমাধান সূত্র বের হয়নি। কিন্তু সামরিক প্রতিরোধ বজায় রাখার পাশাপাশি কূটনৈতিক আলোচনাও জারি রেখেছিল নয়াদিল্লি। তারই ফল মিলল এতদিন পর। অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলেন।

পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এই বিএসএফ জওয়ান ঘটনার দিন একটি খামারের কাছে ডিউটি দিচ্ছিলেন। রুটিন ভিজিটের সময় সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেন। অজান্তে এমন কাজ করে ফেললেও সঙ্গে সঙ্গে তাঁরে ফেলেন পাকিস্তান রেঞ্জার্স অর্থাৎ পাকিস্তান সেনার সদস্যরা। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁকে ফেরাতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেন। এদিকে জওয়ানের স্ত্রী নিজে দিল্লিতে গিয়ে বিএফএফ-এর উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। শেষমেশ তিনি সুসংবাদ পেলেন।