পুরী: রবিবার বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ পুরীতে গড়াল জগন্নাথদেবের রথের চাকা। শ্রী মন্দির থেকে গুণ্ডিচা মন্দিরে মাসির বাড়ি যাচ্ছেন জগন্নাথদেব, বলরাম এবং দেবী সুভদ্রা। ন’দিন সেখানে থাকবেন তাঁরা। রথের রশিতে টান দিতে উপচে পড়ে জগন্নাথ ভক্তদের ভিড়।
https://x.com/ANI/status/1809971006678646818?t=Q1eKSGBiELZqtySJvoCXCg&s=19
শ্রী মন্দিরের সিংহদুয়ারের সামনে বড় দণ্ডতে সুসজ্জিত তিনটি রথে অধিষ্ঠান করেন তিন দেবতা। সেখান থেকেই গড়াতে শুরু করে রথের চাকা। প্রথমে বলরামের তালধ্বজ রথটি টানা শুরু হয়। তারপর টানা হয় বাকি দুই রথ।
https://x.com/ANI/status/1809883851541615033?t=2YKVV4nmqa_7QyaKIy02ZA&s=19
পুরীতে জগন্নাথের রথযাত্রার সময় হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ভক্তদের মধ্যে। আর তাতেই পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে দাবি। এখনও পর্যন্ত এক জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কী কারণে মৃত্যু তা এখনও স্পষ্ট নয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভিড়ে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। ঘটনার পর পরই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে রথ বার হয়। রথ উপলক্ষে রবিবার পুরীতে জনসমাগম হয় লাখ লাখ মানুষের। রথ পুরীর গ্র্যান্ড রোডের উপর দিয়ে যাওয়ার সময়ই বিপত্তি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রথের দড়ি ধরে টানার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। তখনই পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভিড় থেকে বেরিয়ে আসতে চান অনেকে। তাতেই বিপদ বাড়ে। ঘটনায় বেশ কয়েক জন পুণার্থী জখম হয়েছেন।
এদিন পুরীর মহোৎসবে উপস্থিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। রাজ্যপাল রঘুবর দাস এবং মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝির উপস্থিতিতে শুরু হয় উৎসব। তাঁরা সকলেই রথের রশিতে টান দেন। এই প্রথম রথযাত্রার আয়োজন ওডিশার BJP সরকার। তবে আমন্ত্রণ জানানো হয় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককেও।
https://x.com/ANI/status/1809890601074340286?t=eqqU5DfylyCjLjQnnuy6Rg&s=19
এই দিনটির জন্য গোটা বছর অপেক্ষা করে থাকেন জগন্নাথ ভক্তরা। লাখ লাখ দর্শানার্থী হাজির পুরীতে। জগন্নাথের রথের দড়িতে একবার টান দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন ভক্তরা। অবশেষে বিকেলে এল সেই সুযোগ। ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং দেবী সুভদ্রার দর্শন পেতে বড়দণ্ড এবং গ্র্যান্ড রোডে ভক্তদের ঢল নেমেছে। রাজবেশ ধারণ করেছেন ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং দেবী সুভদ্রা।
পহন্ডি রীতি অনুযায়ী, শ্রী মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে প্রথমে বের করে আনা হয় শ্রী চক্ররাজ সুদর্শনের বিগ্রহ। এরপর একে একে নিয়ে আসা হয় ভগবান বলরাম, দেবী সুভদ্রা এবং জগন্নাথ প্রভুকে। প্রত্যেক দেবতার মাথায় বাঁধা হয় সিল্কের কাপড়। বিগ্রহের পিঠে থাকে একটি শক্ত কাঠ। মন্দিরের সপ্তম সিঁড়িতে বিগ্রহগুলিকে রেখে ফুলের বর্ষণ করা হয়। এরপর ফুলের মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়। গজপতি দিব্যসিংহ দেব ‘ছেঁড়া পহনরা’ রীতি পালন করেন।
এ বারের রথযাত্রা অন্যবারের থেকে অনেকটাই আলাদা। ৫৩ বছর পর এসেছে বিরল যোগ। এবারের রথযাত্রার তিথি পড়েছে দু’দিন। ৭ এবং ৮ জুলাই, দু’দিন উৎসব পালিত হবে পুরীতে। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রবিবার ভোর ৩টে ৪৪ মিনিট থেকে ৮ জুলাই ভোর ৪টে ১৪ মিনিট পর্যন্ত যোগ রয়েছে।
বিকেল ৫টা নাগাদ জগন্নাথদেব, বলরাম এবং দেবী সুভদ্রার রথের চাকা গড়াতে শুরু হয়েছে। কিন্তু, সূর্যাস্তের পর রথ টানার নিয়ম নেই। সে কারণে সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থেমে যাবে রথ। এরপর ফের সোমবার সূর্যোদয় হয়ে গুণ্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন তিনি দেবতা। ভক্তরা এবার দুই দিন রথের রশি টানার সুযোগ পাবেন। শেষবার দু’দিনের রথযাত্রা হয়েছিল ১৯৭১ সালে।