অর্পিতা বনিক, বনগাঁ: বঙ্গে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে অকালবৈশাখী৷ ঝড়- বৃষ্টিতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বহু গ্রামের মানুষ ৷অনেকেই ভেবেছিলেন আবাস যোজনার পাকাবাড়ি পাওয়ার তালিকায় নাম থাকায় বাড়ি হবে ৷ অন্তত ঝড়-বৃষ্টির কবল থেকে রেহাই মিলবে এবার ৷সেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন অসংখ্য মানুষ ৷
দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন৷ জোড় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শাসক- বিরোধী দুই শিবিরেই ৷ কিন্তু কেমন আছেন গ্রামের মানুষ জন ৷ তার খোঁজখবর নিতে দেশের সময়-এর সঙ্গে আমি অর্পিতা চলে এসেছি বনগাঁ ব্লকের ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকার হরিদাসপুর পাড়ুইপাড়ায়৷
আবাস যোজনার তালিকায় নাম ওঠার পরেও এত দিনে টাকা না পেয়ে হতাশ অনেকেই। অনেকে আবার নতুন বাড়ি পাবেন, এই আশায় পুরনো ঘর ভাঙতে শুরু করেছিলেন। তাঁরা ভাঙাবাড়ি নতুন করে মেরামত করেছেন। অনেকেরই প্রশ্ন, কয়েক দফায় বাড়িতে এসে তদন্ত হল। প্রশাসনের লোকজন আশ্বাস দিলেন, দ্রুত টাকা পাওয়া যাবে। কার সাথে কার কীসের ঝামেলা জানি না। রাজনীতি বুঝি না। নিজেদের ভাঙা ঘরে আর থাকা যাচ্ছে না তা বিলক্ষণ টের পাচ্ছি। বলে অভিযোগ জানালেন অনেকেই ৷
আবাস যোজনার তালিকায় নাম ওঠার পরেও তাঁদের মাথা গোজার মতো ছাদ কি পেলেন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর ছয়ঘড়িযা পঞ্চায়েত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা?
ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ কি বলছেন জানতে৷ দেখুন ভিডিও
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এখনও ঘোষণা হয়নি ভোটের দিনক্ষণ। তার আগে লড়াইয়ের প্রস্তুতিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে তৃণমূল।
পিছিয়ে নেই বিজেপিও। যুব মোর্চার ‘গ্রাম সম্পর্ক অভিযানে’র পর এবার গ্রাম বাংলার অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যেতে আরও একটি রণকৌশল নিয়েছে গেরুয়া শিবিরও ৷পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওবিসি ভোটে নজর বিজেপির ৷ বাংলার অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে নতুন কর্মসূচি নিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাংলার ৫ হাজার বাড়িতে পৌঁছোনোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপির ওবিসি মোর্চা।
একদিকে যখন তৎপর বিজেপি, অন্যদিকে পুরোদমে মাঠে নেমেছে শাসক দলও। এক সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয় আগামী ১ এপ্রিল থেকেই রাজ্যে ফের শুরু হবে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি বজায় রাখতেই এই তৎপরতা বলে মনে করছে একাংশ। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, দুয়ারে সরকার ছাড়াও অন্যান্য কর্মসূচি যেমন, দিদির দূত, দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতও জোর দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।
প্রশাসনের কর্তারাও মনে করছেন, তালিকায় গোলমাল থাকলে তদন্ত চলুক। কিন্তু গরিব মানুষের টাকা দেওয়ার কাজ দ্রুত শুরু করে দেওয়া উচিত। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের তালিকার এক তৃতীয়াংশ নামই বাদ গিয়েছে আবাস প্লাসের নতুন সংশোধিত তালিকায়। প্রাথমিক পর্যায়ে জেলায় ৫৫ হাজার মানুষের নামে ঘরের অনুমোদনও এসেছে। এঁদের পাকাবাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা ছিল।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আবাস যোজনার পুরনো তালিকায় নাম ছিল ২ লক্ষ ৮৭ হাজার মানুষের। সাম্প্রতিক ঝাড়াই-বাছাইয়ের পরে চূড়ান্ত তালিকায় নাম আছে ১ লক্ষ ৮৯ হাজার মানুষের। বাদ গিয়েছে ৯৮ হাজার মানুষের নাম।