দেশেরসময়ওয়েবডেস্কঃ দীপাবলির আগে শনিবার ‘রোজগার মেলার’ সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এদিন ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানের সূচনা করে বলেছেন, রোজগার মেলায় ১০ লক্ষ মানুষ চাকরি পাবেন। তিনি এই উদ্যোগকে নিয়োগ ও স্বনির্ভর ক্ষেত্রে গত ৮ বছরে একটি মাইলস্টোন পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন। শনিবারই দেশের বিভিন্ন শহরে ৭৫ হাজার যুবকদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে।
এদিন ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত ৮ বছরে গৃহীত বিভিন্ন সংস্কারের কারণে ভারত বিশ্বের পঞ্চতম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে এদিন বলেছেন,”আমাদের কর্মযোগীদের” প্রচেষ্টায় সরকারি বিভাগগুলির দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘এটা সত্য যে বিশ্বের অনেক বড় অর্থনীতি মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করছে ৷
কোভিডের এই দু’বছর নয়। বরং দেশে ১০০ বছর ধরেই মহামারী (আর্থিক) চলছে বলে উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । সেইসঙ্গে এও বললেন, তাঁর সরকার সর্বোতভাবে এই অবস্থাকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ১০০ বছরের মহামারী ১০০ দিনে কাটবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
দেশের আর্থিক দুরবস্থা এবং বেকারত্বের হার শিখরে পৌঁছনোর কথা মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শনিবার রোজগার মেলার (Rojgar Mela) ভাষণে বলেছেন, “কোভিড পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে। সারা পৃথিবীর বহু অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশ কড়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশ ১০০ বছর ধরে মহামারীর মধ্যে দিয়ে চলছে। তা ১০০ দিনে কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।”
Addressing the Rozgar Mela where appointment letters are being handed over to the newly inducted appointees. https://t.co/LFD3jHYNIn
— Narendra Modi (@narendramodi) October 22, 2022
এদিন মোদীর কণ্ঠে ফের মেক ইন্ডিয়ার প্রশংসা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া। দেশ এখন আমদানিকারক থেকে রফতানিকারক দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। এরকম অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে দেশ গ্লোবাল হাবের অংশ হয়ে উঠেছে। ‘ তাঁর আরও সংযোজন, ‘যখন খবর পাওয়া যায় যে, ভারত থেকে প্রতি মাসে ১০০ কোটি মোবাইল ফোন বাইরে রফতানি হয় তখন তা আমাদের দেশের সামর্থ্যকেই তুলে ধরে। ভারত যখন রফতানির সমস্ত পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে দেয় তখন এটাই প্রমাণ হয় যে গ্রাউন্ড লেভেলে প্রচুর চাকরিও তৈরি হয়েছে।’
অনেকের মতে, প্রধানমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, স্বাধীনতার আগে থেকে স্বাধীনতার পরে তাঁর সরকার আসা পর্যন্ত দেশ ক্রমশ পিছন দিকে হেঁটেছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে ভারত যে দুর্বল হয়েছে তা তিনি আজ বললে কাল ঠিক করে দিতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে বিরোধীদের বক্তব্য, আসলে বিজেপির সবই দেখানো এবং জুমলা। এই প্রধানমন্ত্রী তো আচ্ছে দিনের স্বপন ফেরি করেছিলেন। আর আজ যখন দেশের অর্থনীতি ডুবছে তখন ওঁর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন আমেরিকায় গিয়ে বলে আসছেন, টাকার দাম পড়ছে না, ডলার শক্তিশালী হচ্ছে।
প্রশানমন্ত্রী এও বলেন, এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে কর্মসংস্থান তৈরির। এদিন ৭৫ হাজার সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। দীপাবলির আগে যা ছিল মোদীর মেগা ইভেন্ট।
প্রসঙ্গত, দীপাবলির আগে দেশের ৭৫ হাজার যুবকের জন্য বড় ‘উপহার’ ঘোষণা করা হবে শনিবারই। এই রোজগার মেলার অধীনে ৫০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ২০ হাজার জন যুবককে নিয়োগপত্র দেবেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলমন্ত্রী অশ্বিণী বৈষ্ণব জয়পুর যাবেন নিয়োগপত্র তুলে দিতে, বেসামরিক উড়ান পরিষেবার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ভোপাল এবং কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর চণ্ডীগঢ় থেকে নিয়োগপত্র হস্তান্তর করবেন।