
PM Modi Inaugurates Vizihinjam international Seaport: জানা গিয়েছে, পাবলিক-প্রাইভেট সেক্টর মডেলের উপর ভিত্তি করে আদানি পোর্টস ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল লিমিটেডের (Special Economic Zone Ltd) যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে দেশের এই প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর।
কেরালার ভিঝিনজামে শুক্রবার আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং শিল্পপতি গৌতম আদানি। গৌতম আদানির সংস্থা আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জ়োন এই পোর্ট তৈরি করেছে।


পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছে এই বন্দর। এটি ভারতের প্রথম ডিপওয়াটার ট্রান্সশিপমেন্ট পোর্ট। এর পাশাপাশি এটি দেশের প্রথম সেমি অটোমেটেড পোর্ট। এই সমুদ্র বন্দর তৈরি করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৮ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা। এর জেরে সমুদ্র বাণিজ্যে ভারতের অবস্থান আরও পোক্ত হবে। শুধু তাই নয়, এই বন্দর চালুর জেরে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ কোটি টাকা খরচ কমবে ভারতের।
https://x.com/ANI/status/1918198044664930340?t=fxAi0kcdkUGBgFNc_uB6Xw&s=19

ট্রান্সশিপমেন্ট কী?
বিভিন্ন আকারের জাহাজে করে পণ্য আদানপ্রদান চলে গোটা বিশ্বে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিশালাকার মালবাহী জাহাজ (কার্গো শিপ) ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এই সমস্ত বিশালাকার জাহাজ দেশের সমস্ত বন্দরে ঢুকতে পারে না। কারণ সব বন্দরে বড় জাহাজকে পরিষেবা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো থাকে না। তাই ট্রান্সশিপমেন্ট পরিষেবার মাধ্যমে বড় জাহাজ থেকে তুলনায় আকারে ছোট জাহাজের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন বন্দরে মাল আনা হয়। পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য এত দিন অন্যান্য দেশের মুখাপেক্ষী থাকত ভারত।
https://x.com/ANI/status/1918185765894537337?t=1QQE-VmrHiL64BrvtX682Q&s=19
কলম্বো, সিঙ্গাপুর বা দুবাইয়ের মতো বিদেশি বন্দরেই হতো ভারতে প্রায় ৭৫ শতাংশ পণ্যের ট্রান্সশিপমেন্ট। অন্য দেশে ট্রান্সশিপমেন্ট পরিষেবার জন্য গাঁটের কড়ি খরচা করতে হতো ভারতকে। কিন্তু ভিঝিনজাম বন্দরের জন্য ভারতের সাশ্রয় হবে ২২ কোটি মার্কিন ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা।
অবস্থানের দিক থেকেও এই বন্দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কেরালার ভিঝিনজাম বন্দর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রুটের খুব কাছেই অবস্থিত। ইস্ট-ওয়েস্ট শিপিং চ্যানেল ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে।
বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বাণিজ্য রুট থেকে এই বন্দরের দূরত্ব মাত্র ১০ নটিক্যাল মাইল। এর পাশাপাশি এই বন্দর থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তেও পণ্য পৌঁছে দেওযার কাজ সহজ হবে। ৪৭ নম্বর জাতীয় সড়ক এই বন্দর থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। রেলপথ মাত্রা ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বন্দর থেকে সরাসরি সড়ক এবং রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য রাস্তা তৈরির কাজও চলছে।
ইতিমধ্যেই ভিনঝিজাম বন্দরে এসেছে ‘দ্য তুর্কিয়ে’ জাহাজ। মেডিটেরেরিয়ান শিপিং কোম্পানির এই জাহাজ বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মালবাহী জাহাজ। যা ৪০০ মিটার লম্বা এবং ৬১ মিটার চওড়া। এই জাহাজ ২৪ হাজারে বেশি টিইইউ কন্টেনার পরিবহণ করতে পারে। সেই জাহাজও ভিড়েছিল এই বন্দরে।
গত বছর ১৩ জুলাই থেকেই এই বন্দরে ট্রায়াল অপারেশন শুরু হয়েছে। গত বছর ৪ ডিসেম্বর থেকে কমার্শিয়াল অপারেশন চলছে এই পোর্টে। এই সময়ে ২৭২টি বড় ভেসেল এসেছে এই বন্দরে। সাড়ে ৫ লক্ষের বেশি কন্টেনার হ্যান্ডল করা হয়েছে। সেমি অটোমেটেড হওয়ায় দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিহীন পরিষেবা মিলছে এই জাহাজে। এই বন্দরের পরবর্তী পর্যায়ের কাজ ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।