দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাজার শব্দের সমান একটি ছবি। প্রচলিত কথাটা যেন আরওএকবার প্রমাণহল৷ সম্প্রতি নেটমাধ্যমে এক জোড়া প্যাঁচার ছবি ভাইরাল হয়েছে। গাছের ডালে একে অপরের গায়ে ঠেস দিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে তারা। ছবি তোলার পর ফোটোগ্রাফার ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘রিয়েল লাইফ লভ-বার্ড’। এই ছবিটি তোলার জন্য যে কসরত করতে হয়েছে তারই কা গল্প শুনিয়েছেন ওই ফোটোগ্রাফার।
Pre Wedding Photoshoot I suppose! #Spotted owlets at Bhandara, #Maharashtra pic.twitter.com/cxygtO1x04
— Madhu Mitha, IFS (@IfsMadhu) January 19, 2022
ছবিটি তুলেছেন অশ্বিন কেঙ্কারে। মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জনিয়েছেন, তিনি সম্প্রতি ভান্ডারায় শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। এক দিন রাতে জাতীয় সড়ক ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই সড়কের ধারে একটি গাছে প্যাঁচা দু’টি নজরে আসে তাঁর। পর দিন খুব সকালেই ক্যামেরা নিয়ে ওই গাছের সামনে হাজির হন অশ্বিন। তাঁর কথায়, ভাবতে পারিনি যে ওই একই ভাবে বসা অবস্থায় প্যাঁচা দু’টিকে দেখতে পাব। তবে ওরা অন্য ডালে গিয়ে বসেছিল। সকালে এত কুয়াশা ছিল যে ওদের ছবি ঠিক মতো তুলতে পারিনি।
এদিন কয়েকটা ছবি তুলেই চলে যান অশ্বিন। তবে মনে একটা খচখচানি থেকেই গিয়েছিল। কিন্তু প্যাঁচা দু’টির ছবি তোলার নেশা আর জেদ যেন চেপে ধরেছিল অশ্বিনকে। তিনি বলেন, ওদের ছবি তোলার জন্য প্রতি দিন ওই গাছের সামনে ক্যামেরা নিয়ে হাজির হতাম। আবহাওয়া ভাল না থাকার কারণে মনের মতো শট কিছুতেই পাচ্ছিলাম না ৷ সাত দিনের মাথায় সুযোগটা এসে গেল। আকাশ পরিষ্কার। স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল প্যাঁচা দু’টিকে। যথেষ্ট আলোও ছিল ছবি তোলার মতো। দু’টি প্যাঁচার মধ্যে একটি তখন ঘুমে মগ্ন। অন্যটি আধখোলা চোখে তাকিয়ে রয়েছে। যেন এক জন আর এক জনকে পাহারা দিচ্ছে!
অশ্বিনর কথায় , তবে আমি অপেক্ষা করছিলাম দু’টি প্যাঁচা কখন চোখ খোলে তার জন্য। তার পরই ছবিটা তুলব। ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু সেই শটের সৌভাগ্য হয়নি। অগত্যা ঘুমন্ত এবং আধঘুমন্ত প্যাঁচার ছবি তুলেই সন্তুষ্ট হতে হল। তবে ওরা যদি আমার দিকে তাকিয়ে থাকত, আর সেই ছবিটা তুলতে পারতাম, তা হলে আরও ভাল হত। তবে প্যাঁচা দু’টির আদুরে ছবি তুলেই বেশ প্রশংসা কুড়োচ্ছেন অশ্বিন।
তাঁর কথায়, শ্বশুরমশাইয়ের জন্যই এই ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। তাঁকে রোজ সকালে ঘুম থেকে টেনে তুলতাম আমাকে ওই গাছের কাছে গাড়ি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এবং এর জন্য তাঁর শ্বশুর অনিল থোটেকে ধন্যবাদ দিয়েছেন অশ্বিন।
“রাস্তাঘাটে এমন অনেক দৃশ্য চোখে পড়ে যার মধ্যে কোনও একটা গল্প লুকিয়ে থাকে। তা আনন্দ বা কষ্টেরও হতে পারে। আবার অনুপ্রেরণা বা সাফল্যেরও। আপনার দূরদর্শিতাই বলে দেবে আপনি এক জন ভাল ফোটোগ্রাফার। একটা ছবির মধ্যে লুকিয়ে থাকে অনেক না-বলা কথা। একটা ছবি হয়ে উঠতে পারে যোগাযোগের মাধ্যম। একটা মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি হয়ে অনন্তের দিকে ধাবিত হয়। ক্যামেরা বা লেন্স উন্নতমানের হলেই যে ভাল ছবি আসবে, তা নয়। ফোটোগ্রাফিক সেন্স থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। একটা দৃশ্য নানা দিক থেকে নানারকম দেখায়। আপনার দেখার চোখই বলে দেবে ঠিক কোন জায়গা থেকে সেরা ছবিটি উঠবে। যাঁরা মুহূর্তকে লেন্সবন্দি করতে ভালবাসেন, তাঁরা নিশ্চয়ই চান, তাঁদের তোলা ছবিটি হয়ে উঠুক পিকচার পারফেক্ট। সেই সমস্ত ফোটোগ্রাফার দের জন্য দেশের সময়- এর উপস্থাপনা “ছবির গল্প”।” তাহলে আর অপেক্ষা কেন! আপনার তোলা প্রিয় ছবিগুলির সঙ্গে গল্প লিখে পাঠিয়ে দিন ” দেশের সময়” এর দফতরে : e-mail- deshersamay@deshersamay@gmail”