দেশের সময় ,পেট্রাপোল : ‘খবর ছিল’ ছিপ ছিপে তরুণীর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পাচার হচ্ছে সোনা! তৈরি ছিলেন বিএসএফ কর্তারা ।
অভিবাসন দফতরের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে ভিসা জমা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসছিলেন যুবতী। ব্যাগ তল্লাশিতেও সন্দেহজনক কিছুই মেলেনি। তবে বিপত্তি বাধল মেটাল ডিটেক্টর পেরনোর সময়। মেটাল ডিটেক্টরের ‘বিপ বিপ’ শব্দ ধরিয়ে দিল মহিলা পাচারকারীকে। তল্লাশি চালিয়ে ওই মহিলার যৌনাঙ্গ থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার চারটি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করল বিএসএফ।
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটে। উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে বিএসএফ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া সোনার আনুমানিক ওজন ৪৭৭ গ্রাম এবং আনুমানিক বাজারমূল্য ২৯ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা।
বিএসএফ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নিয়ম মেনেই আইসিপি পেট্রাপোলের প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়ারত যাত্রীদের তল্লাশি চালাচ্ছিল বিএসএফ। সেই সময় বিএসএফের মহিলা রক্ষীরা বাংলাদেশ থেকে আগত এক মহিলা যাত্রীকে আটক করেন। প্রাথমিক ভাবে দেখা যায়, ওই মহিলার বৈধ পাসপোর্ট ও ছিল । তল্লাশিতেও তাঁর কাছ থেকে কিছু পাওয়া যায়নি।
কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না । এর পর মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি চালানোর পর ওই মহিলাকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জেরার মুখে যৌনাঙ্গে সোনার বিস্কুট লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেন ওই মহিলা। এর পর ওই মহিলার যৌনাঙ্গ থেকে সোনার চারটি বিস্কুট উদ্ধার হয়।
বিএসএফ সূত্রে খবর, কন্ডোমে চারটি বিস্কুট ঢুকিয়ে তা গোপনাঙ্গে পুরে রেখেছিলেন ওই মহিলা। সোনার বিস্কুটগুলি উদ্ধারের পর ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়।
বঙ্গ ফ্রন্ট ইয়ারের বিএসএফের এক কর্তার কথায়, ‘‘যে কোনও প্রকার চোরাচালান আটকাতে বদ্ধপরিকর বিএসএফ।
সূত্রের খবর, অতীতে কোকেন বা হেরোইন পাচার কারবারীরা এভাবেই পুলিশ প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে পাচারের চেষ্টা করত। মাঝেমধ্যে ধরাও পড়ত। ইদানীং একাধিকবার সোনা এবং বিদেশি মুদ্রা পাচারের ঘটনা সামনে আসছে। গরু এবং কয়লা পাচারের ঘটনা সামনে আসার পর এরাজ্যে সোনা এবং বিদেশি মুদ্রার পাচার চক্র সক্রিয় হয়েছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তাঁদের মতে, এতদিন দেশের মধ্যে সোনা পাচারের অন্যতম করিডর হিসেবে চিহ্নিত ছিল মুম্বই। সম্প্রতি বনগাঁ সীমান্ত থেকে যেভাবে সোনা এবং বিদেশি মুদ্রা পাচারের অভিনব পদ্ধতি সামনে এসেছে তাতে বাংলাতেও সোনা ও বিদেশি মুদ্রার পাচারকারীদের রমরমা বাড়ছে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তাঁদের মতে, যেভাবে পাচারের স্টাইল বদলাচ্ছে তাতে এর পিছনে বড় কোনও চক্র জড়িত থাকতে পারে। ইতিমধ্যে সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজনকে জেরা করে এবিষয়ে কিছু তথ্যও পেয়েছেন বিএসএফ এর কর্তারা। তাঁর ভিত্তিতে শুরু হয়েছে তদন্তও তল্লাশি ।