দেশের সময় , পেট্রাপোল: টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার সকাল থেকে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ফের পণ্য বাণিজ্য শুরু হল।
এ ব্যাপারে পেট্রাপোল স্থলবন্দরের ম্যানেজার কমলেশ সাইনি জানান, বিগত পাঁচ দিন ধরে কর্মবিরতির জেরে গত সোমবার থেকে পেট্রাপোল সীমান্তে আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকার পর এর সঙ্গে যুক্ত পরিবহণ শ্রমিক-সহ আটটি সংগঠনের পক্ষ থেকে বিএসএফ ও পে্ট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি-র সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয় এবং বৃহস্পতিবার পে্ট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি-র পক্ষ থেকে একটি সরকারী বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় ৷
তারপরই বন্দরের সঙ্গে যুক্ত পরিবহণ শ্রমিক-সহ বিভিন্ন সংগঠন মিলিতভাবে সরকারী নির্দেশের বিষয়টি বিবেচনা করে আমদানি-রফতানি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন,এর ফলে পেট্রাপোলে দু’দেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রফতানি নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা কাটল। সমস্ত সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে শনিবার থেকে পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানি শুরু হয়েছে। ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার পেট্রাপোলের ম্যানেজার সমস্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা ও সংগঠকদেরকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সরকারের সিদ্ধান্তকে মান্যতা দেওয়ার জন্য৷
প্রসঙ্গত, পাঁচ দিন ধরে পেট্রাপোল সীমান্তে আমদানি-রফতানি বন্ধছিল। বার বার এই বিষয়ে আলোচনা করে কোনও সুরাহা মেলেনি বলেও অভিযোগ রফতানির কাজে জড়িতদের। গাড়ি রাখার জায়গায় গাড়িচালক এবং খালাসিদের ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। কিছু দিন আগেই স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, কোনও গাড়িকে বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ঢুকতে দেওয়া হবে না। তার পর থেকেই বৈধ কাগজ ছাড়া গাড়ি ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
যদিও রফতানির কাজে জড়িতদের দাবি, করোনা আবহে অনেক গাড়ির কাগজ পুনর্নবীকরণ করা হয়নি। তার মাঝেই হঠাৎ করে এই নতুন নিয়মের কারণে প্রচুর গাড়ি আটকে যাবে বলেও আশঙ্কা তাঁদের। তাই আগামী ৬ মাস গাড়ির কাগজ বৈধ করার সময় চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের আরও দাবি, তত দিন পর্যন্ত যেন তাঁদের গাড়ি আটকানো না হয়। দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত তাঁরা এই ভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন। এর ফলেই পেট্রাপোল সীমান্তে বন্ধ হয়ে যায় আমদানি-রফতানি। বুধবার শুল্ক দফতরের সঙ্গে কলকাতাতে বৈঠকে বসেছেন ক্লিয়ারিং এজেন্টরা। সেখান থেকে কোনও সমাধান পাওয়া যায় কি না তা দেখার জন্যও মুখিয়ে ছিলেন আন্দোলনকারীরা।
এরপর, সীমান্ত বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত পরিবহণ শ্রমিক-সহ আটটি সংগঠনের পক্ষ থেকে বিএসএফ ও পে্ট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি-র সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক হয় এবং বৃহস্পতিবার পে্ট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি-র পক্ষ থেকে একটি সরকারী বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় ৷ তারপরই বন্দরের সঙ্গে যুক্ত পরিবহণ শ্রমিক-সহ বিভিন্ন সংগঠন মিলিতভাবে সরকারী নির্দেশের বিষয়টি বিবেচনা করে আমদানি-রফতানি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী ৷ তিনি আরও বলেন, আপাতত পূর্বের নিয়মে চালু হল আমদানি -রফতানি৷ পে্ট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি-র ম্যানেজার কমলেশ সাইনিকে অনেক ধন্যবাদ তিনি শ্রমিকদের সমস্যার কথা বুঝে তাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন৷
পেট্রাপোল এক্সপোর্ট এন্ড ইমপোর্ট এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ দে বলেন,টানা পাঁচ দিনের আন্দোলনে পেট্রাপোল সীমান্ত বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে সীমান্ত বাণিজ্য অর্থনৈতিক প্রবল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেল ব্যাবসায়ীরা৷ আমরাও খুশি পে্ট্রাপোল ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি-র জারি করা নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে ফের আমদানি-রফতানি চালু হওয়ায়।