দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীন ১৪৫ ব্যাটালিয়নের আইসিপি পেট্রাপোলের জওয়ানরা ৪৫টি সোনার বিস্কুট সহ একজন চোরাচালানকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
জব্দ করা সোনার ওজন ৫২৪২. ৯১০ গ্রাম এবং যার মূল্য আনুমানিক ৩ কোটি ৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪২৪ টাকা। চোরাকারবারীরা বিএসএফ জওয়ানদের ফাঁকি দিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফেরত আসা একটি খালি ট্রাকের হোস পাইপের কাছে তৈরি গহ্বরে ওই সোনার বিস্কুটগুলি লুকিয়ে আনার চেষ্টা করছিল।
শুক্রবার ভোরবেলায় প্রাপ্ত সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আইসিপি পেট্রাপোলের কর্মীরা যানবাহন চেকিংয়ের সময় আইসিপি বেনাপোল থেকে আসা একটি সন্দেহজনক ট্রাককে অনুসন্ধানের জন্য আটকায়। তল্লাশির সময়, জওয়ানরা ট্রাকের হোস পাইপের কাছে তৈরি একটি গহ্বর থেকে টেপ দিয়ে মোড়ানো এবং কাপড়ে বাঁধা ২১টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে। এরপর বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের কর্মীরা দ্রুত সোনার বিস্কুট ও ট্রাকটি জব্দ করে এবং ট্রাক চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়। ধৃত ট্রাক চালকের নাম সম্রাট বিশ্বাস। উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সে।
জব্দ করা ২১টি সোনার বিস্কুট এবং ট্রাক চালককে সমস্ত কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কাস্টম অফিস পেট্রাপোলের কাছে যখন হস্তান্তর করা হচ্ছিল, তখন সেই ট্রাকে আরও কিছু সোনার বিস্কুট লুকিয়ে রাখার বিষয়ে বিএসএফ জওয়ানরা নিশ্চিত তথ্য পান।
এরপর কোম্পানি কমান্ডার তৎক্ষণাৎ এক সিভিল মেকানিককে ডেকে ট্রাকের ইঞ্জিন খুলে তল্লাশি করেন, যেখানে সোনার বিস্কুট আলাদাভাবে লুকিয়ে রাখার খবর জানা গিয়েছিল। কয়েক ঘণ্টা পর ট্রাকের ইঞ্জিন খুললে আরও ২৪ টি সোনার বিস্কুট টেপে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়। এভাবে ট্রাক থেকে মোট ৪৫টি সোনার বিস্কুট জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সম্রাট বিশ্বাস জানায়, সে উত্তর ২৪ পরগনার পিরোজপুরের স্থায়ী বাসিন্দা। সে ট্রাক চালক হিসেবে কাজ করে এবং নিয়মিত রপ্তানি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে যায়। সে জানায়, গত ২১ আগস্ট একটি ট্রাকে স্পঞ্জ আয়রন বোঝাই করে বাংলাদেশে গিয়েছিল। ২৫ আগস্ট ভারতে ফেরার সময় বেনাপোল, বাংলাদেশ পার্কিং এলাকায় যশোরের বাসিন্দা সুমন মণ্ডল তার সাথে যোগাযোগ করে এবং তাকে ওই ৪৫টি সোনার বিস্কুট দেয়। সে আরও জানায়, সুমন মণ্ডলের নির্দেশে ভারতে এসে ওই সোনার বিস্কুটগুলো গোপালনগর গ্রামের সলাম মণ্ডলের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল।
ভারতে ফেরার সময় আইসিপি পেট্রাপোলের প্রধান ফটকের কাছে পৌঁছে যানবাহন তল্লাশির সময় বিএসএফ তাকে ৪৫ টি সোনার বিস্কুটসহ ধরে ফেলে। এছাড়া, বিএসএফ-এর গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছেন যে সালাম মণ্ডল, সামাদ মণ্ডল, আখর মণ্ডল, কুতুবদিন কারিকর, মাকেল কারিকর, এরা সবাই উত্তর ২৪ পরগনর বাসিন্দা এবং সোনা চোরাকারবারী। এই সমস্ত চোরাকারবারীরা আজগর শেখের জন্য কাজ করে। আজগর শেখ ভারতে সোনার প্রধান সরবরাহকারী।