দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ অবশেষে রাজ্যের তিন মন্ত্রী পদ থেকেই অপসারণ করা হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে৷
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। তার আগেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ক্যাবিনেট থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা রাজভবনকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই এই সমস্ত দফতর এখন নিজের কাছেই রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থাৎ শিল্প ও বাণিজ্য, শিল্প পুনর্গঠন, তথ্য ও প্রযুক্তি এবং সংসদ বিষয়ক দফতরের দায়িত্বও সামলাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মর্মে নতুন বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে রাজভবন।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতার করার পর শুরুতেই তাঁকে বরখাস্ত করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের একটি সূত্রের মতে, বিজেপির কৌশল মোকাবিলা করার জন্য গোড়ায় কিছুটা সময় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ডায়মন্ড সিটির পর বেলঘরিয়ায় পার্থ-বান্ধবীর ফ্ল্যাট থেকে ২৮ কোটি টাকা উদ্ধারের পর যে রকম ছিঃ ছিঃ শুরু হয়েছে তাতে পার্থ বহিষ্কার করা ছাড়া উপায়ন্ত ছিল না। না হলে ওই কালির ছিঁটে সরকার ও দলের গায়ে এসে লাগছিল।
রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পার্থকে এ ভাবে সরানোতেই ব্যাপারটা থেমে থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থকে দলের মহাসচিব পদ থেকে সরানোর ব্যাপারে ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
এখন দেখার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্তের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় কী প্রতিক্রিয়া দেন। ইডি হেফাজতে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বুধবার জোকার ইএসআই হাসপাতালে চেক আপের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তখন সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কি মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দেবেন?’ জবাবে পার্থ বলেন, কী কারণে?
পার্থর এই মেজাজ দেখে তৃণমূলের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ আরও বাড়তে থাকে। দলের একটি সূত্রের মতে, পার্থর ওই চোখ পাকানো আর বিকেলে বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধারের পর তাঁকে অপসারণের জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামীরা চাপ বাড়াতে শুরু করেন। এর পরই চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু তা নয়, এদিন বিকেলে ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন কাউন্সিলের বৈঠক ডেকে মুখ্যমন্ত্রী এও বুঝিয়ে দেন, পার্থকে বহিষ্কার করায় কাজে কোনও ফারাক হবে না। সরকারের কাজ যেমন চলছিল তা চলবে।
সরকার তরফে একদিকে যখন তিনটি দফতর থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, তখন বিষয়টি নিয়ে কী হতে চলেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থান? এই নিয়ে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চর্চা। ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু দলের কী অবস্থান তা এখনও স্পষ্ট করেননি তৃণমূল হাইকম্যান্ড। এই পরিস্থিতিতে আজই দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠকে ডেকেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল পাঁচটায় বৈঠক হতে চলেছে তৃণমূল ভবনে। এই বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিয়ে দলের অবস্থান জানাতে পারে তৃণমূল, এমনটাই জল্পনা রাজনৈতিক মহলের।