দেশের সময়: কথায় বলে শব্দ ব্রহ্ম! বৃহস্পতিবার দুপুরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শব্দ-গুচ্ছ নতুন করে তোলপাড় ফেলে দিল।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে আদালতে তোলা হয়েছে। আদালতে বিচারকের সামনে যখন পার্থকে নিয়ে আসা হয় তখন হাতজোড় করে দাঁড়িয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। তারপর বিচারক তাঁকে কোর্ট লকআপের দিকে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সময়েই ঘাড় ঘুরিয়ে এজলাসে উপস্থিত সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে পার্থ বলেন, ‘নো বডি উইল বি স্পেয়ার্ড (কাউকে ছাড়া হবে না)!”
প্রথমে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে এজলাসে নিয়ে আসা হয়। পরে আসেন পার্থ। হাত জোড় করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। তার পর বলেন, কেউ ছাড় পাবেন না। এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি কী বোঝাতে চাইলেন, তা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে।
স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল তৈরি হচ্ছে, কার বা কাদের উদ্দেশে এমন চোখ পাকিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক। দল তাঁকে সাসপেন্ড করেছে। মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছে নবান্ন। তাঁকে কেন্দ্র করে যে সব ছবি সামনে এসেছে তা নিয়ে ববি হাকিম সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য আমরা লজ্জিত!”
এরমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁর পাশে আবার দাঁড়িয়েছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এ হেন পরিস্থিতিতে কি পার্থ এদিন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দিকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন?
কেন পার্থবাবু বলেছেন এই কথা সেই ব্যাখ্যা তিনি যতক্ষণ না দেবেন তা বোঝা সম্ভব নয়। তবে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে উপস্থিত থেকে যাঁরা পার্থর ওই কথা শুনেছেন, তাঁদের মনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, কী বলতে চাইলেন একদা তৃণমূলের মহাসচিব?
ইডি অবশ্য এদিন আদালতকে জানিয়েছে, পার্থ ও অর্পিতার আরও সম্পত্তির হদিশ তারা পেয়েছে। লতায়-পাতায় জড়িয়ে রয়েছে তাঁদের আর্থিক সম্পর্ক। যেমন অর্পিতার জীবন বিমা পলিসিতে রয়েছে পার্থর নাম। আবার পার্থর মোবাইল মেসেজে পাওয়া গিয়েছে সেই বিমার প্রিমিয়াম পেমেন্টের টেক্সট। সুতরাং এখনই জামিন যেন না পান পার্থ ও অর্পিতা।
এদিন পার্থর আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানান। তাঁরা বলেন, পার্থর শরীর খারাপ। ১২ আগস্ট তিনি জেলের ভিতর খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর রক্তের হিমোগ্লোবিন লেভেল ৮ এ নেমে এসেছে। ক্রিয়েটিনিন অনেক বেড়েছে। তিনি হাঁটতে পারছেন না। এমনকি জেলে যে শৌচাগার রয়েছে, সেখানে যেতে পারছেন না। ফলে তাঁকে জামিন মঞ্জুর করা হোক। বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবীরা। তাঁরা বলেন, গ্রেফতারের আগে পার্থ সুস্থই ছিলেন। সব জায়গায় যেতেন।
গ্রেফতার হওয়ার পরই তিনি অসুস্থতার কথা বলছেন। তাঁকে ভুবনেশ্বর এমসেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চিকিৎসকরা তেমন কিছু বলেননি। এদিন ইডির পক্ষে আদালতে জানানো হয়, অপার ৬০টি ব্যাঙ্ক একাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।