দেশের সময়: ফের ভোট বাংলায় ৷ অর্থাৎ ভোট পর্ব মিটে গেলেও তা মিটলনা। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন যে নির্ঘন্ট জারি করেছিল, তাতে মনোনয়ন, ভোট এবং ভোট গণনা পর্ব মিটে গিয়েছে। সব দফাতেই রাজ্য জুড়ে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ছবি ফুটে উঠেছে। বুধবার বিকেলে গণনা সম্পূর্ণ হওয়ার পর দেখা গিয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে গ্রামবাংলা রইল তৃণমূলের দখলেই। তবে এর মাঝেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানাল ফের ভোট হবে একাধিক বুথে।
হাওড়া সাঁকরাইলের ১৫টি বুথে ভোটের দিন ব্যালট পেপার ছিনতাই হয়েছিল। পরে ভোট গণনায় দেখা যায় ১৫টি বুথেই শাসক দল তৃণমূল জয়ী হয়েছে। এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা ও সিঙ্গুরে, বেশকিছু বুথে ব্যালট ছিনতাই হয়েছিল। বিডিও-র রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই সব বুথে নতুন করে ভোটের নির্দেশ দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আরও কিছু বুথে নতুন করে ভোট হবে। কমিশন এভাবেই পরে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে।
শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিন মোটের উপর শান্ত ছিল হাওড়া। বড় কোনও অশান্তি বা রক্তপাতের ঘটনা দেখা যায়নি। কিন্তু সাঁকরাইলের একাধিক ভোট কেন্দ্রে সকাল থেকে বিরোধীরা ব্যালট লুঠ হওয়ার অভিযোগ করছিলেন।
সেগুলি হল, মানিকপুর দর্জিপাড়া প্রাথমিক স্কুলের সাতটি বুথ, রশ্মি মহল শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের একটি বুথ, সারেঙ্গা হাইস্কুল ও পল্লিশ্রী পাঠাগারের কয়েকটি বুথ।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সাঁকরাইলের এই ১৫টি বুথে যে ভোটগ্রহণ হবে তাকে পুনর্নিবাচন বলা হবে না। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী নতুন করে ভোট নেওয়া হবে এই ১৫টি বুথে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম বেরাবেড়ি। নতুন করে ভোট হবে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরাতেও। হাবরার পুমলিয়া স্কুলে দুটি বুথে ভোট হবে। গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম হল ভুরখুন্ডা। ওই ভুরখুন্ডারই এমাডালিয়া মাদ্রাসায় যে বুথ ছিল সেখানে ব্যালট লুঠের অভিযোগ উঠেছিল। নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছে, এই বুথেও নতুন করে ভোট নেওয়া হবে। হাবরার গুমা গ্রাম পঞ্চায়েতের দোগাছিয়া নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলের একটি বুথেও ভোট লুঠের অভিযোগ ছিল। সেখানেও নতুন করে ভোট হবে।
এছাড়া সিঙ্গুরের একটি বুথে নতুন করে ভোট নেওয়া হবে। ১৩ নম্বর নেতাজি জয়ন্তী পাঠাগারে ওই বুথ ছিল।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, কলকাতা হাইকোর্টে বুথ ধরে ধরে বিরোধীদের যে অভিযোগ জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে নড়ে বসেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কারণ, হাইকোর্ট শুধু কমিশনকে দায়ী করছে না, বিডিও ও ভোট কর্মীদের কাছেও কৈফিয়ত তলব করছে। তাই স্বচ্ছতা প্রমাণের জন্য কমিশনের এই অবস্থান নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।
বৃহস্পতিবার সকাল সকাল বিধানসভা পৌঁছে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ঠ্যালায় না পড়লে বেড়াল গাছে ওঠে না।” তাঁর কথায়, “আমরা আদালতে আবেদন জানিয়েছি। আইনজীবীরা সওয়াল করবেন। এর শেষ দেখে ছাড়তে চাই”।