Turbat Under Attack: এদিনের হামলায় নৌ ও বায়ুসেনা মিলিয়ে প্রায় এক ডজন নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু হয়েছে বলে বিএলএ-র দাবি। একাধিক গাড়ি নিশানা করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। এই হামলায় অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের টুর্বুট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ৪ জঙ্গিও খতম হয়েছে।
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হোলির সকালে রক্তাক্ত হল পাকিস্তান। মুর্হুমুহু বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবিমানঘাঁটি টুর্ব্যাট।
মঙ্গলবার ভোরে অতর্কিত হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য পাক সেনা। লাগাতার বিস্ফোরণে বিমানঘাঁটিতে অন্তত ৪টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও ৩টি ড্রোন ধ্বংস হয়ে গেছে বলে খবর। হামলাকারীদের সঙ্গে পাক সেনার গুলির লড়াই চলছে। ইতিমধ্যে হামলার দায় স্বীকার করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন, বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)।
পাক সেনা সূত্রে খবর, এদিন ভোররাতে টুর্ব্যাট নৌ-বিমাঘাঁটিতে হামলা চালায় বিএলএ বিদ্রোহীরা। তারা বিমানঘাঁটিতে ঢোকার চেষ্টা করতেই বাধা দেয় নিরাপত্তারক্ষীরা। শুরু হয়ে যায় গুলির লড়াই। বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে হামলাকারীরা। তাতেই আগুন ধরে যায় বিমানঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা হেলিকপ্টারগুলিতে।
গোলাগুলিতে বালোচ বিদ্রোহীদের চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। অন্তত ১২ জন পাক সেনার মৃত্যুর খবরও সামনে এসেছে। হামলাকারীদের কাছ থেকে হ্যান্ড গ্রেনেড-সহ অনেক স্বয়ংক্রিয় আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গেছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে বিএলএ মাজিদ ব্রিগেড।
কিছুদিন আগেই বালুচিস্তানের বন্দর এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। বন্দর শহর গ্বদরে আত্মঘাতী হামলাও হয়েছে। সেবারও স্বাধীনতাপন্থী বালোচ সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) হামলার দায় স্বীকার করেছে।
বালুচিস্তানের মানুষের সঙ্গে পাকিস্তান সরকারের বিরোধ দীর্ঘ দিনের।
এই অঞ্চলের মানুষ পাক সরকারকে স্বীকার করে না। বরং তাদের দাবি, জোর করে তাদের পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বালুচিস্তানের দাবি, পাকিস্তানের জন্মের পর ১৯৪৮ সালের ২৭ মার্চ অন্যায় ভাবে বালুচিস্তান দখল করেছে পাক সেনা। তার আগে এটি একটি স্বাধীন প্রদেশ ছিল। বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ বালুচিস্তান।
বালুচিস্তান নানা সম্পদের খনি। বালুচ নাগরিকদের দাবি, চিনের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে বালুচিস্তানের সম্পদ লুট করছে পাক সরকার। ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) তৈরির পরে গত কয়েক বছরে সেই লুট আরও বেড়েছে। বালুচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে চিন নিয়ন্ত্রিত গ্বদর বন্দর। ওই রাস্তা ব্যবহার করেই ইসলামাবাদ এবং বেজিংয়ের শাসকেরা বালুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বলে দাবি করে আসছে ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ)-র সশস্ত্র গোষ্ঠীরা।
পাকিস্তানের অধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন হওয়ার দাবিতে বালুচিস্তানে গড়ে উঠেছে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এটি একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী, যার প্রধান এবং একমাত্র দাবি পাকিস্তানের বশ্যতা থেকে বেরিয়ে আসা। আর এই কারণেই দীর্ঘ দিন ধরেই লড়াই চালাচ্ছে বিএলএ বিদ্রোহীরা।
প্রসঙ্গত, বালুচিস্তানে চিনের বিনিয়োগ নিয়ে ক্ষুব্ধ বিএলএ। যার প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন সরকারি জায়গা হামলা চালিয়েছে বিএলএ। এদিন টুর্বুট বিমানঘাঁটিতে হামলা নিয়ে চলতি সপ্তাহে দু-বার এবং চলতি বছরে তিনবার হামলা চালাল বিএলএ।