প্রদীপ দে, ঢাকা: ওপার বাংলার মানুষের বহু আকাঙ্ক্ষিত এবং নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত স্বপ্নের পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম সেতুটি আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের একথা জানালেন বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে আরেকটি বিষয় পরিষ্কার আমরা দুটো সামারি নিয়ে এসেছিলাম, একটা সামারি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তারিখ দিয়ে সই করেছেন ২৫ জুন। আরেকটা সামারি তিনি স্বাক্ষর করেননি। সেটা হচ্ছে নামকরণ। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে।
এখানে অন্য কারও নাম তিনি দেবেন না। বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারও নাম তিনি সংযোজন করবেন না।’ পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে তৈরি ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটির মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টি জেলার সঙ্গে সে দেশের বাকি অংশের সড়ক সংযোগ তৈরি হবে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতু হতে চলেছে।
পদ্মা সেতুতে গাড়ির লেন থাকবে এক এক পাশে দুটো করে এবং একটি ব্রেকডাউন লেন। অর্থাৎ মোট ছয় লেনের ব্রিজ হচ্ছে, যদিও একে বলা হচ্ছে ফোর লেনের ব্রিজ। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার। দ্বিতল পদ্মা সেতুর এক অংশ থাকবে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায়, আরেক অংশ শরিয়তপুরের জাজিরায়। সেতুর ওপরে গাড়ি চলাচল করবে, আর রেল চলবে নীচের অংশে। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ করা হচ্ছে ৩০,১৯৩.৩৯ কোটি টাকা। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।
এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী নিয়ন্ত্রণ, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি। ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য টোলের হার নির্ধারণ করেছে সরকার। গত ১৭ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পরিবহনের জন্য আলাদা আলাদা টোলের হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে বড় বাসে ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং মাঝারি ট্রাকে লাগবে ২ হাজার ৮০০ টাকা।
বাংলাদেশ সরকার মনে করে, পদ্মা সেতু দিয়ে সে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাতায়াত সহজ হবে, সময়ও কমবে। চলাচল সহজ করার পাশাপাশি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে পদ্মা সেতু। সমীক্ষা অনুযায়ী, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ১.২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২.৩ শতাংশ।