দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতায় আবারও ওমিক্রন আক্রান্তের হদিশ মিলল। আযারল্যান্ডের ডাবলিন ফেরত এক যুবকের শরীরে ধরা পড়েছে সংক্রমণ।
গত মঙ্গলবার কলকাতা পুরভোটের গণনার দিন আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। জিন পরীক্ষার পর শুক্রবার ওই ব্যক্তির শরীরে মিলল কোভিডের নয়া রূপ। এই নিয়ে পঞ্চম ওমিক্রন-আক্রান্তের হদিশ মিলল রাজ্যে।
সূত্রের খবর, ডাবলিন থেকে বিমানে ওঠার আগে কোভিড টেস্ট করিয়েছিলেন ওই যুবক। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। এরপর ডাবলিন থেকে ম্যানচেস্টার, আবুধাবি ও দিল্লি হয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে নামেন তিনি। জানা গেছে, জ্বর, সর্দি-কাশির মতো হাল্কা উপসর্গ তাঁর ছিলই। কলকাতায় ফেরার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও পজিটিভ আসে। এরপর জিনোম সিকুয়েন্স করিয়ে ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্টের হদিশ মেলে।
আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কোভিড ইউনিটে তাঁর চিকিৎসার সবরকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। যুবকের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
রাজ্যে এই নিয়ে ওমিক্রন রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে পাঁচ। নাইজেরিয়া ফেরত ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধের শরীরে ওমিক্রন ধরা পড়েছে। অন্যদিকে লন্ডন ফেরত আলিপুরের এক যুবক ওমিক্রন আক্রান্ত। দুজনেই কলকাতার বাসিন্দা।
আলিপুরের যুবকও লন্ডন থেকে ফিরেছিলেন সম্প্রতি। তিনিও ওমিক্রন পজিটিভ। রবিবার লন্ডন থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৬৪ বিমানে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পরেই তাঁর আরটি-পিসিআর টেস্ট করা হয়।
রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাঁকে অন্যান্য যাত্রীদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়। পরে তাকে ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর নমুনা নিয়ে জিনোম সিকুয়েন্স করার পরেই ওমিক্রন ধরা পড়ে। দুজনকেই কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়ান্ট শরীরে ঢুকেছে কিনা তা জানা যাবে একমাত্র জিনোম সিকুয়েন্স করলে। তাই রাজ্যে নতুন যাঁরা আসছেন বা আগে ভ্রমণের রেকর্ড আছে তাঁদের আরটি-পিসিআর টেস্ট করিয়ে নমুনার জিনোম সিকুয়েন্স করা জরুরি।
শুধুমাত্র আক্রান্ত ও তার চারপাশের লোকজন নয়, আরও বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে রাজ্যে। তাঁদের থেকে সংক্রমণ হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই কোভিড টেস্টের পাশাপাশি কনট্যাক্ট ট্রেসিংও জরুরি।
আক্রান্তের সংস্পর্ষে কতজন এসেছেন তা চিহ্নিত করা যাবে কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমেই। আর ২৫-৩০ দিনের মধ্যে ওমিক্রনের সংক্রমণ মারাত্মক আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এখন থেকেই সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
ওমিক্রন সংক্রমণে রেকর্ড! দেশে এক দিনে নতুন আক্রান্ত ১০০-এর বেশি, আবার কড়াকড়ি?
দেশে হুহু করে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসাব অনুসারে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ১০০ জন ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ।
নতুন ওমিক্রন আক্রান্তদের মধ্যে ৮৮-জনই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। এর পরেই তালিকায় রয়েছে দিল্লি, সেখানে নতুন করে ৬৭ জন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। তার পর রয়েছে তেলঙ্গানা ৩৯, তামিলনাড়ু ৩৪, কর্ণাটক ৩১ ও গুজরাত ৩০।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬,৬৫০। এই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৫১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৭৪ জনের।
ইতিমধ্যে দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বিশেষ বৈঠক সেরেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনগুলিকে সতর্ক ও সাবধান থাকতে বলেছেন।
শুক্রবার সকালের খবর, ইতিমধ্যে করোনার সংক্রমণের বাড়বাড়ন্ত রুখতে কড়া হতে চলেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেখানে ফিরে আসতে চলেছে রাতের কার্ফুর নিয়ম।