দেশের সময় ঠাকুরনগর : লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম করে হুমকি চিঠি পেলেন শান্তনু ঠাকুর। এনআরসি করলে মন্দির উড়িয়ে দেওয়া হবে, এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন শান্তনু। পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ আছে বলে জানান তিনি। গোটা বিষয় সম্পর্কে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং প্রধানমন্ত্রীকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। দেখুন ভিডিও
যে চিঠি এসেছে তাতে দেগঙ্গার এক ঠিকানা লেখা। দেগঙ্গারই এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে। তাতে লেখা, এনআরসির ফলে যদি সংখ্যালঘুদের ওপর কোনও অত্যাচার হয় তাহলে গোটা দেশ জ্বলবে। তার সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের বাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হবে! বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়ে শান্তনু সরাসরি রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শান্তনু বলেন, ”এ রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের দুরবস্থা যে এমন ঘটনা ঘটছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে পুলিশমন্ত্রী অথচ তাঁর রাজ্যেই একজন প্রাক্তন সাংসদকে জঙ্গিরা হুমকি চিঠি পাঠাচ্ছে।” এই বিষয়ে যাতে সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর।
এই হুমকি চিঠির ইস্যুতে পাল্টা শান্তনুকেই নিশানা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর দাবি, পুরোটাই নাটক! শান্তনু ঠাকুর নিজে ভোটের জন্য এই নাটক করছে। মমতাবালার কথায়, রবিবার রাতে তাঁদের ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছে, তা সমস্ত মতুয়া ভক্তরা দেখেছে। এখন নাটক করে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সক্রিয় থাকা জঙ্গি সংগঠনের নাম করে যে চিঠিটি শান্তনুকে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ, সেটি লেখা হয়েছে পরিষ্কার বাংলা ভাষায়। ছাপা বাংলা হরফে সেই চিঠিতে লেখা, ‘‘শান্তনুবাবু আশা করি ভাল আছেন। আপনাকে জানাচ্ছি যে, পশ্চিমবঙ্গে যদি এনআরসি হয় এবং এনআরসি-র কারণে মুসলমানদের উপর কোনও অত্যাচার হয় তা হলে পশ্চিমবঙ্গ তথা সারা ভারত জ্বলবে। আপনাদের ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। ঠাকুরবাড়ির কাউকে বাঁচতে দেওয়া হবে না। লস্কর-ই-তইবার নাম শুনেছেন তো। আমরা লস্কর-ই-তইবার সদস্য।’’
জঙ্গি সংগঠনের নাম করে তাঁকে পাঠানো সেই হুমকি চিঠিটি ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে এনেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেই। সেই চিঠি অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার হাদিপুর গ্রাম থেকে হুমকি চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। পাঠিয়েছেন নজরুল ইসলাম সাহেব আলি এবং ফজের আলি নামের দুই ব্যক্তি।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের বাড়িতে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর।
শাসক শিবির বলছে, ”শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর দলবল মমতাবালা ঠাকুরের বাড়িতে হামলা করেছে। মমতাবালা এবং তাঁর মেয়েকে সারারাত বাড়ির বাইরে থাকতে বাধ্য করেছে।” এই ঘটনায় শান্তনু ঠাকুর সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গাইঘাটা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জোর করে বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করা থেকে শুরু করে, অশ্রাব্য ভাষায় গালি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।