



আজ থেকে শুরু হল নবরাত্রি। সোমবার সকাল হতেই দেশের বিভিন্ন মন্দিরে উপচে পড়ল ভক্তদের ঢল। মা দুর্গাদেবী ও তাঁর নয় রূপের আরাধনায় ব্যস্ত সকলে। এদিকে বাংলায়ও দুর্গোৎসব শুরু হয়ে গেছে। রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন। রাত থেকেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছে বহু মানুষ। দেখে মনেই হবে না মহালয়ার রাত।

দিল্লির কালকাজি মন্দিরে সকাল থেকে তিলধারণের জায়গা নেই, একই অবস্থা ঝান্ডেওয়ালান মন্দিরেরও। ছত্তরপুরের শ্রী আদ্যা কাত্যায়নী শক্তিপীঠে সকাল থেকে শুরু হয় আরতি, অন্যদিকে মুম্বইয়ের মুম্বাদেবী মন্দিরে ঐতিহ্যবাহী ‘কাকড় আরতি’র মধ্য দিয়ে সূচনা হয় নয় দিনের এই উৎসবের।

মধ্যপ্রদেশের আগর মালওয়া জেলার নলখেদার মা বগলামুখী মন্দিরেও ভিড় ছিল নজরকাড়া। কথিত আছে, মহাভারত কালে পাণ্ডবরা এই মন্দিরে প্রার্থনা করেছিলেন। সেই আধ্যাত্মিক তাৎপর্যেই আজও দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা এখানে পৌঁছন।

বাংলার বিভিন্ন মন্দিরেও অবাঙালিরা নবরাত্রির পুজো করছেন। কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, মেট্রোপলিটন দুর্গা মন্দির-সহ একাধিক জায়গা ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মতো।

নবরাত্রি হিন্দুদের একটি প্রাচীন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ‘শ্রীমদ্-দেবী-ভাগবতে’ নবরাত্রির বৃত্তের স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। এতে মহর্ষি ব্যাস জন্মেজয়ের কাছে এই বৃত্তের পালনীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রকাশ করেছেন। মহান সাধক বলেছেন যে, বসন্ত এবং শরৎ উভয় ঋতুতেই, বেশিরভাগ মানুষ অসুস্থ হন। অনেকে প্রাণ হারান। তাই এই দুই ঋতুকে যমদংশ বলা হয়। মানুষ দেবী দুর্গার আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন এই সময়।
দেবী দুর্গা শান্তি, সুখ এবং সুস্বাস্থ্য প্রদান করেন। মহাননির্বাণ তন্ত্রে বলা হয়েছে, সকলেরই একটি সুখী এবং আনন্দময় পারিবারিক জীবন লাভের জন্য নবরাত্রি পালন করা উচিত। বছরের অন্যান্য সমস্ত ব্রত পালন না করে শুধু নিষ্ঠার সঙ্গে নবরাত্রি ব্রত পালন করলে দেবীর কৃপা লাভ করা সম্ভব।

এ বছর নবরাত্রি পালন করতে হবে দশদিন। কারণ এবার চতুর্থী তিথি পড়েছে দু’দিন। মহালয়ার পরের দিন অর্থাৎ ২২ সেপ্টেম্বর সোমবার থেকে নবরাত্রির ব্রত পালন শুরু। এই দিনগুলোয় সকালে স্নান সেরে পরিস্কার বস্ত্র পরে ঠাকুরের আসনের সামনে বসে মা দুর্গাকে স্মরণ করে ‘শ্রীশ্রী দুর্গায়ৈ নম:’ জপ করতে হবে। যে যতবার পারবেন ততবার জপ করবেন। কথাতেই আছে দুর্গা নাম জপ করলে সব বিপদ আপদ কেটে যায়। মা ঠাকুমারা ওই জন্যই বাড়ি থেকে বেরনোর সময় ‘দুগ্গা দুগ্গা’ বলে থাকেন।