দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ লাফিয়ে বাড়ছে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন বলে সূত্রের খবর।
সংক্রমণের নিরিখে মহারাষ্ট্র, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, কর্ণাটক, তামিলনাড়ুর অবস্থা উদ্বেগজনক। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের পজিটিভিটি রেট নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে কোভিড সংক্রমণে পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে। এই পরিস্থিতিতে আজ সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী। এই বৈঠকে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে কথা হতে পারে।
এর আগে ৭ জানুয়ারি কলকাতা চিত্তরঞ্জন ক্যান্সার হাসপাতালের নতুন ক্যাম্পাস উদ্বোধনে ভার্চুয়ালি মুখোমুখি হয়েছিলেন মোদি-মমতা। সেই সময় কেন্দ্রের সমস্ত গাইডলাইন ৯৯ শতাংশ মেনে চলা হচ্ছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে রাজ্যপালকে নিয়েও সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি এদিন সংক্রমণ রুখতে রাজ্যগুলিকে কী পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী সেদিকেই নজর রয়েছে।
এদিকে এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ল করোনা সংক্রমণের হার । শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২ লক্ষ ৪৭ হাজার করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে দেশে। করোনার চলতি তৃতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে যা সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় যে সংখ্যাটি ৮৪ হাজার ৮২৫ বেশি। আক্রান্তের এই বিপুল সংখ্যাবৃদ্ধিতে স্বাভাবিক ভাবে কপালে ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের। উদ্বেগ বাড়িয়ে কমেছে সুস্থতার হারও। দেশে সুস্থতার হার দাঁড়িয়েছে ৯৫.৫৯ শতাংশ। বেড়েছে দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও। দেশে এখন মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৫৮৮ জন। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফ থেকে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
দেশে বেড়েছে সংক্রমণের হারও। দেশে দৈনিক সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ১৩.১১ শতাংশ। সাপ্তাহিক সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ১০.৮০ শতাংশ। দেশের মোট ২৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ওমিক্রনের সংক্রমণ এখনও ধরা পড়েছে। এই শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮০। এর মধ্যে অবশ্য কেরলে শেষ কয়েকমাস ধরে ১৯৯ জন মৃতের হিসাবও রয়েছে। মৃতের সংখ্যায় কেরলের একটা সামগ্রিক হিসাব দেওয়ার ফলে অনেকটাই বেড়েছে সংখ্যাটি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের দাপটে সবচেয়ে প্রভাবিত রাজ্যগুলির মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, কর্নাটক, দিল্লি। মহারাষ্ট্রে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৪৬ হাজার ৭২৩-এ। একদিন আগের পরিসংখ্যান থেকে সেটি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৭ শতাংশের মতো। সে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৭০ লক্ষের গণ্ডি। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ৮৬ জন ওমিক্রন আক্রান্ত রয়েছে বলেও খবর। এ ছাড়া দিল্লিতে নতুন করে ২৭ হাজারের বেশি ওমিক্রন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় যে বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ২৯ শতাংশ। দিল্লিতে সংক্রমণের হার ২৬ শতাংশের কাছাকাছি।
কেরলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার তুলনায় ২৯ শতাংশ বেড়েছে সংক্রমণের হার। বুধবার কেরলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৭৪২। সে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। বৃহস্পতিবার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বার বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।