

কলকাতা পুলিশের প্রশংসায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘উৎসবের দিনে পরিবারকে ভুলে ডিউটি করতে হয় পুলিশকে। ওদের পরিবারকে স্যালুট। ৫ শতাংশ ভুলের জন্য ওঁদের ৯৫ শতাংশ ভালো কাজ ভুলে সমালোচনা করা উচিত নয়। সমালোচনা সহ্য করেও কাজ করে যায় পুলিশ।’

যাদের কাজ নিন্দা করা, তাঁরা নিন্দা করবেই। তাঁদের অপপ্রচারে কান না দেওয়ার জন্য রাজ্যের পুলিশ কর্মীদের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

বৃহস্পতিবার আলিপুর বডিলাইনসের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে পুলিশকর্মীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাদের কাজই হল নিন্দা করা, তারা নিন্দা করবেই। আপনি আপনার কাজটা করে যান। যারা অপপ্রচার করে, তাদের কথায় কান দেবেন না। কারণ ৫ জনের জন্য তো আর ৯৫ জনকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়।”

এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। নিজের উদাহরণ টেনে বলেন, “আমি ভূতের মতো সারাদিন খাটি, তবুও সবচেয়ে বেশি গালাগালি আমাকেই খেতে হয়। তবু আমি বিশ্বাস করি, ক্ষমায় সবচেয়ে বড় ধর্ম।”
পুজোর মরসুমেও পুলিশ কর্মীদের ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে নিযুক্ত থাকতে হয়। অনেকে নিয়মিত বাড়িও যেতে পারেন না। তা সত্ত্বেও কিছু হলে পুলিশকেই সবচেয়ে বেশি গালাগালি সহ্য করতে হয়। এই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুলিশের অনেক সদস্যই দিনরাত খেটে চলেছেন, তাঁদের প্রাপ্য সম্মান যাতে তাঁরা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।

সেই সঙ্গে আবারও মনে করিয়ে দেন, পুলিশের পরিবারগুলির অবদানও কতখানি। “আজ যদি কোনও পুলিশ কর্মী মারা যান, সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। না হলে পরিবার চলবে কী করে? বাড়ির মেয়েরা সাপোর্ট না দিলে পুলিশ এতটা কাজ করতে পারত?” — বলেন মমতা।

এবার আলিপুর বডিলাইনসের পুজো মণ্ডপ তৈরি হয়েছে দিঘার জগন্নাথ ধামের অনুকরণে। সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যেভাবে দিঘার মণ্ডপকে তুলে এনেছেন, কোনও কথায় তার উপমা হবে না।”
তিনি জানান, এবার থেকে পুলিশ বিভাগের মধ্যে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করে সেরা পুলিশ পুরস্কৃত করা হবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শতাধিক পুজোরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
পুজোর আলোয় মাখা আবহে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে যেমন শোনা গেল প্রশাসনিক কণ্ঠস্বর, তেমনই উঠে এল মানুষের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে এক রাজনৈতিক নেত্রীর আবেগের ছোঁয়াও।

“নিন্দুকের কথা শুনে যদি হাল ছেড়ে দিতাম, তাহলে এতদূর আসা হত না”—মমতার এই বার্তাতেই যেন বারবার ফিরে এল তাঁর চেনা রাজনৈতিক দৃঢ়তা। জানালেন, আগামীদিনে রাজ্য পুলিশে আরও বেশি করে মহিলাদের আনা হবে।