দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মমতা জানিয়েছিলেন সোমবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে নবান্নে আন্দোলনরত ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। সেই মতো আজ বিকেল চারটে কুড়ি নাগাদ ধর্মতলা থেকে সতেরো জন ডাক্তার বাসে চড়ে রওনা দেন নবান্নের উদ্দেশ্যে।

সময়ের আগেই সভাঘরে প্রবেশ করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এর আগে ‘লাইভ স্ট্রিমিং’-র দাবিতে নবান্নে ভেস্তে গিয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক। এ বার আন্দোলনকারীরা সে রকম কোনও দাবি রাখেননি। তা সত্ত্বেও বৈঠকের ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ চলে।
সন্ধে ৭.০৮:বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ৪৫ মিনিটের। ৫ টায় শুরু হয়ে সেই বৈঠক শেষ হল সন্ধে ৭ টা বেজে ০৮ মিনিটে। এবার কী পদক্ষেপ করবেন জুনিয়র ডাক্তাররা? সেদিকেই তাকিয়ে সবমহল।

এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কালীঘাটের বৈঠকে দেরিতে পৌঁছেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। তার আগে নবান্নের বৈঠকেও দেরিতে পৌঁছেছিলেন তাঁরা। সোমবার নবান্নে নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছেছেন আন্দোলনকারীরা। সেজন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

কোন কোন অর্গানাইজেশন থেকে বলেছেন সেটা জানাবেন: মুখ্যমন্ত্রী
মমতা:
আপনারা শুরু করুন। আপনারা আশাকরি দাবির সংখ্যা বাড়াবেন না
জুনিয়র ডাক্তার আশফাকুল নাইয়া:
মানসিক দৃঢ়তার জায়গা থেকে আমাদের সহকর্মীরা লড়াই করে যাচ্ছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: কোন কোন অর্গানাইজেশন থেকে বলেছেন সেটা জানাবেন
দেবাশিস হালদার:একটাই অর্গানাইজেশন। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্ট

বৈঠকে ‘দেরিতে আসা’ নিয়ে কথা বলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসক আসফাকুল্লা নাইয়া। তিনি জানান, এর আগে প্রতি বারই বৈঠকের আগে কম সময় পান আন্দোলনকারীরা। সে কারণে নিজেদের মধ্যে জিবি করে বৈঠকে আসতে দেরি হয়ে গিয়েছিল।

দেবাশিস বলেন, আরজি কর-কাণ্ড হয়েছে প্রতিষ্ঠানিক ব্যর্থতার কারণে।
উঠল স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ প্রসঙ্গ
অগ্নিবীণ কুণ্ডু:
স্বাস্থ্য সচিবের সম্বন্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আছে। আপনি কাগজ চেয়েছিলেন। বেশ কিছু কাগজ স্যারের হাত থেকে বেরিয়েছে। সেই কারণে অপসারণের কথা বলেছি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় :
একটা মানুষের অভিযোগ প্রমাণের আগে তাঁকে অভিযুক্ত বলা যায় না। তুমি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারো।
কিঞ্জল নন্দ:
স্বাভাবিক পরিবেশ চাই। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নই।
আমরা যা চাইছি তাতে হাতি- ঘোড়া হবে না হয়ত: অনিকেত
অনিকেত মাহাতো:
আমি আরজি করে আমি পড়াশোনা করি। ১৪ই অগস্টের পর কীভাবে একটা অপরাধমূলক প্রবণতা ক্যাম্পাসের ভিতরে কাজ করছিল। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের স্যর আসে। তদন্তমূলক কমিটি যে তৈরি হয়েছিল, রিপোর্ট যখন আসে, আন্দোলন করতে গিয়ে যন্ত্রণা দেখেছি। একটা কমিটি দিয়ে বা গ্রিভেন্স সেল দিয়ে এই যন্ত্রণা বলা যায় না। যৌন নির্যাতন থেকে শুরু করে, টাকা আদায়, চাঁদা আদায় সেই পরিবেশটুকুও কলেজ ক্যাম্পাসে ছিল না। একটা মেয়ের উপর যদি কোনও ঘটনা ঘটে, সে কোথায় গিয়ে বলবে? কেন আমরা এতগুলো কমিটি চাইছি, কেন প্রতিনিধিত্ব চাইছি সেটা পরিষ্কার হবে। আন্দোলন চলার পরও দেখুন ঔদ্ধত্য কোথায়? ম্যাডাম দেখবেন দ্বিতীয় অভয়া না হয়। আমরা যা চাইছি তাতে হাতি- ঘোড়া হবে না হযত ! অভিযোগকারীকেই বলছে তুমিই র্যাগিং করেছ।ন্যূনতম বিচারও পাইনি।
‘এটা নতুন দাবি’, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হীমাদ্রি শেখর বেরা (ট্রপিক্যাল):
আমাদের প্রথম দাবি নিহত খুনের চিকিৎসকের ন্যায় বিচার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়:
আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব পেপার্স দিয়ে দিয়েছি। আমরাও চাই এটা তাড়াতাড়ি হোক
চিকিৎসক আসফাকুল্লার:
আরজি করের ট্রমা কেয়ারে সিলড প্যাকেটে রক্তমাখা গ্লাভস উদ্ধারের প্রসঙ্গ
কিঞ্জল নন্দ:
থ্রেট কালচার নিয়ে কথা বলেছি। আজও ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের থ্রেট কালচারের প্রধান নাম সে গিয়ে অধ্যক্ষের ঘরে তালা লাগিয়ে দিয়ে এসেছে। ১৪ অগস্ট আরজি করে যে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তাঁদেরও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়:
এটা নতুন দাবি

বিরূপাক্ষর নাম শুনতেই ‘বিরক্ত’ মুখ্যমন্ত্রী
আমাদের নতুন কোনও দাবি নেই। আগের দাবিগুলোই পয়েন্ট আকারে বলা হয়েছে। যেগুলো মেনে নেওয়া হয়েছে বলা হচ্ছে আগে সেগুলো আমরা বলে নিচ্ছি। তারপরে কোন জায়গাগুলো মানা সম্ভব হচ্ছে না সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব
স্টেট টাস্ক ফোর্সের এসওপি। প্রতি মাসে বৈঠক চাইছি
কলেজ স্তরে মনিটরিং কমিটিতে ছাত্রদের নির্বাচিত প্রতিনিধি নির্বাচন এখনই হচ্ছে না। অন্তর্বর্তী প্রতিনিধিত্ব
আমরা চাই না ভবিষ্যতের বিরূপাক্ষ তৈরি হোক।
মমতা: যে উপস্থিত নেই, তার নামে বলা উচিত নয়। তোমরা তোমাদের কথা বলতে পারো। যে উপস্থিত নেই তাঁকে তাঁর কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।
দেবাশিস:কিন্তু আমাদের তাঁদের নামে অভিযোগ আছে। যখন অভিযোগ জানাব বলতে পারব?
মমতা: অভিযোগ তো সবার বিরুদ্ধেই আছে। তুমি তোমার কথা গুলো বলো
আরজি কাণ্ডের পর থেকে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজগুলিতে থ্রেট কালচার তথা হুমকির সংস্কৃতি নিয়ে লাগাতার সমালোচনা হচ্ছে। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে সেই অভিযোগ টেবিলে তাঁর এনে ফেললেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সেই বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারদের ফোরামের অন্যতম নেতা অনিকেত মাহাতো এও অভিযোগ করেন যে, সরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে রীতিমতো শ্লীলতাহানির শিকার হচ্ছেন মহিলা পড়ুয়াদের একাংশ।
বৈঠকে অনিকেত বলেন, কেন আমরা বিভিন্ন মনিটরিং কমিটি গঠনের কথা বলছি, কেন কলেজ স্তরে নজরদারি কমিটিতে পড়ুয়া চিকিৎসকদের প্রতিনিধিত্বের দাবি করছি, তার একটা কারণ রয়েছে। অনিকেতের কথায়, এর কারণ হল সরকারি মেডিকেল কলেজগুলিতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে মহিলা পড়ুয়াদের অনেকেই নরক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে।
অনিকেত বলেন, আমার এখানেও বলতেও সংকোচ হচ্ছে। কিন্তু ঘটনা হল, আরজি কর মেডিকেল কলেজে শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটেছে। তা ছাড়া ভয় দেখিয়ে, জুলুম করে টাকা তোলা, চাঁদা আদায়ের অভিযোগ তোই। কলেজে পড়তে যাওয়ার ন্যূনতম পরিবেশটুকু সেখানে ছিল না।
অনিকেত যখন এ কথাগুলি বলছিলেন, তখন মন দিয়ে তা শোনেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার প্রমুখ।
অনিকেত বলেন, হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসকদের এই যে নরক যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছিল তা থেকে নিস্তার পাওয়ার কোনও পথ ছিল না। কোথায় গিয়ে অভিযোগ জানাবে, কীভাবে জানাবে তার পরিবেশও ছিল না। এমন নয় যে তাঁরা অভিযোগ জানাননি। কলেজের ডিন বা এমএসভিপির কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু জবাবে এও শোনা গেছে যে, আপনার বিরুদ্ধেই তো অত্যাচার করার অভিযোগ রয়েছে।
