দেশের সময় , কলকাতা: আজ থেকে কোমর বাঁধছে তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে আমেম্বদকর মূর্তির পাদদেশে রেডরোডে ধরনায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অথচ মঞ্চে দলের লোগো কেন? মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। মঞ্চ থেকে তার জবাব দিলেন মমতা। বললেন, ‘‘একটা হল আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই বাংলার মানুষের সঙ্গে কোনও অবিচার হলে আমার উপর একটা দায়বদ্ধতা থাকে। মানুষের সেই দায়িত্বটা পালন করার। আর দুই হচ্ছে আমি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান। এবং এই সরকার সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই আজকের এই ধর্নাটা আমি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে না করে আমরা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে করছি। তার কারণেই আপনারা তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো দেখতে পাচ্ছেন। সুতরাং আমি ডবল ডিউটি পালন করছি। কিন্তু আমি বিজেপির মতো সরকারের অর্থ অপচয় করে এ সব করি না। তাই এটা হল দলের অনুষ্ঠান। কিন্তু আমরা সরকারের তরফ থেকে আছি। আমাদের সব মন্ত্রীরাও আছে। এবং আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন সামনে সংবিধানও আছে। সংবিধান তারাই রাখে, যারা ভারতের গণতন্ত্রকে শ্রদ্ধা করে। ভারতের সংবিধানকে সম্মান করে। ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব, ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতা, ভারতবর্ষের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য আজকে আমরা এখানে বসেছি। ’’
ধরনা মঞ্চে মমতা ছাড়াও রয়েছেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। আছেন অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেন। আছেন দোলা সেন, জ্যোৎস্না মান্ডি,সায়নী ঘোষ সহ অনেকে। বুধ ও বৃহস্পতিবার চলবে ধরনা।
বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ ধরনা মঞ্চে আসেন মমতা। মমতার লেখা কবিতা সুরে বেঁধে গান বাজছে ধরনা স্থল রেড রোডে। এদিন আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করে ধরনা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশে রেখেছেন ভারতের সংবিধান। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মালা পরিয়ে দেন সেই সংবিধানের বইয়ে। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে দু’দিনের ধরনায় বসলেন মমতা। এদিকে, রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রীর ধরনা মঞ্চের পাশেই খোলা হয়েছে অস্থায়ী অফিস। সেখান থেকেই প্রশাসনিক কাজ সারবেন মমতা। এদিকে, শহিদ মিনারে অভিষেকের সভায় যোগ দিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তৃণমূল কর্মী–সমর্থকরা আসছেন। শিয়ালদহ, হাওড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ভিড় রয়েছে।
অপরদিকে, আজই শহিদ মিনারে ছাত্র-যুবর সমাবেশ করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়েছে তৃণমূল যুব নেতাদের নাম। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে যুবদের কী বার্তা দেন তার জন্য ধর্মতলার সভার দিকে তাকিয়ে তৃণমূল যুব শিবির।
একদিকে যখন ধর্মতলায় ছাত্র যুবদের পেপটক দেবেন অভিষেক, ঠিক তখনই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থের দাবি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা সহ একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে শহরের প্রাণকেন্দ্রে ধরনায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুই কর্মসূচি থেকে বার্তা দেবেন তৃণমূল শীর্ষ কর্তারা। নজর রাজনৈতিক মহলের। একা তৃণমূল নয়।
আজ পথে নামবে বাম-বিজেপিও। কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রতিবাদে রামলীলা ময়দান থেকে হবে বামেদের মিছিল। অপরদিকে, রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদে প্রদেশ কংগ্রেস অফিস বা বিধানভবন থেকে হবে কংগ্রেসর মিছিল। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। রাজ্যজুড়ে চুরি, কেন্দ্রের টাকা দুর্নীতির করার অভিযোগে শ্যামবাজারে হবে বিজেপির ধরনা।
শহিদ মিনারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার প্রস্তুতি তুঙ্গে।দুপুর ২টো থেকে শুরু সভা৷ তাঁর আহ্বানে মিটিংয়ে যোগ দিতে গেছেন বনগাঁর তৃণমূল জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের নেতৃত্বে একটি দল। বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠের বক্তব্য অনুযায়ী বনগাঁ এবং বনগাঁ সংলগ্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি মানুষ শহিদ মিনারের উদ্দেশ্যে বনগাঁ থেকে দশটা আঠাশের ট্রেনে রওনা দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে৷