দেশের সময়, কলকাতা : লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য মন্ত্রিসভায় বড় রদবদলে আগ্রহী নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আসার এখনই কোনও সম্ভাবনা নেই। কেউ বাদ পড়লে তা ভিন্ন বিষয়। তবে একটা ‘ছোট্ট’ রদবদল যে হতে চলেছে সে কথা বৃহস্পতিবার ঘরোয়া আলোচনায় জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই জল্পনা দানা বাধছিল। বৃহস্পতিবার নবান্ন সূত্রে খবর, তা যে কোনও দিন হয়ে যেতে পারে।শুধু বর্তমান মন্ত্রীদের মধ্যে দফতর ও দায়িত্বের অদলবদল করা হবে। তার পরই নবান্নে নতুন কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ সফরে রওনা হবেন। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী চান, বিদেশ সফরে যাওয়ার আগেই এই প্রক্রিয়া যাতে সম্পন্ন হয়ে যায়।
দফতর অদলবদল হলেও শাসকদলের অন্দরে এ নিয়ে জল্পনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। কারণ, এর মধ্যে দিয়েই মন্ত্রীদের গুরুত্ব নির্ধারিত হবে। কার দফতর কমল, কার বাড়ল, কাকে গুরুত্বপূর্ণ দফতর থেকে সরিয়ে দিয়ে অপেক্ষাকৃত কম ওজনের দায়িত্ব দেওয়া হল—এ সবই ভবিষ্যতের রাজনীতির সূচক হিসাবে দেখা হয়। সেই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার রদবদল ঘিরে শাসকদলে এখন আলোচনা তুঙ্গে।
একুশের ভোটের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বাবুলকে সরিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তার পর বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বাবুল। বালিগঞ্জ বিধানসভার উপ নির্বাচনে জিতে রাজ্যে মন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে পর্যটন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি দফতরের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা।
কিন্তু এই বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট যে পর্যটন দফতর নিয়ে বাবুল ও ইন্দ্রনীল সেনের মধ্যে এখন শীতল যুদ্ধ চলছে। ইতিমধ্যে ইন্দ্রনীলকে পর্যটন নিগমের চেয়ারম্যান করেছেন মমতা। অনেকে মনে করছেন, বাবুলকে পর্যটন দফতর থেকে সরিয়ে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি এও জল্পনা যে তাঁকে পর্যটনের পরিবর্তে অচিরাচরিত শক্তি উৎস দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। আর পর্যটন দফতরের দায়িত্ব পেতে পারেন ইন্দ্রনীল সেন।
আগে পর্যটন দফতরের দায়িত্বে ছিলেন ইন্দ্রনীলই। তাঁকে সরিয়ে বাবুলকে সেই দফতর দেওয়ায় অখুশি ছিলেন তিনি। নবান্নের এক কর্তার কথায়, গোটা ব্যাপারটা এখন মেঘের আড়াল থেকে দেখছেন সেন মহাশয়। হয়তো বা পর্যটন ফিরে পাওয়ার আশায় রয়েছেন ইন্দ্রনীল।
একুশের ভোটের পর মন্ত্রিসভায় ওজন কমেছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের। আগের মেয়াদে খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। কিন্তু এবার তাঁকে বনমন্ত্রী করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অচিরাচরিত শক্তি উৎস দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিলেন তাঁর। কিন্তু নবান্নে আলোচনা যে জ্যোতিপ্রিয়র সামান্য ওজন বাড়তে পারে। শিল্প পুনর্গঠন দফতর কিংবা আইন দফতরেরও অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তাঁকে।
জল্পনা এই যে, জ্যোতিপ্রিয়কে আবার খাদ্য দফতরে ফেরানো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষকে অন্য কোনও দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।