দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেবল কলকাতা নয়, বাংলা-বিহার-ওড়িশা দখলের ডাক দিয়েছেন বিএনপি নেতা। তা নিয়ে শোরগোল। ওপার বাংলার সেই হুঁশিয়ারির আঁচ পড়ল বিধানসভাতেও। বিএনপি নেতাকে চরম কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গর্জে উঠেছে বাংলা। কলকাতা সহ একাধিক জায়গায় প্রতিবাদ হচ্ছে। এরই মাঝে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য তথা বিএনপি নেতা বাংলা দখল করার মন্তব্য করেছিলেন। সোমবার বিধানসভায় সেই ইস্যুতে পাল্টা মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ”আমরা বসে ললিপপ খাব না।”
ওপার বাংলায় চলা অরাজক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তি বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব আগেই দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এটাও স্পষ্ট করেছেন, গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে এবং তাঁরাই ব্যবস্থা নেবে। তবে বাংলা দখলের প্রসঙ্গ যখন উঠেছে তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিক্রিয়া দেবেন এটাই স্বাভাবিক।
সোমবার বিধানসভায় বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কার্যত ওই বিএনপি নেতার মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ”বাংলা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড দখল করবেন। আপনার সেই ক্ষমতা নেই। আর আমরা বসে ললিপপ খাব এটা ভাববেন না।” মমতা এও জানান, ”আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।”
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নের কী অবস্থান, তা জানার ব্যাপারে দুই বাংলার মানুষেরই আগ্রহ রয়েছে। কারণ, বাংলাদেশ পড়শি রাষ্ট্র। দু’দেশের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু লাগাতার আক্রমণ ও অত্যাচারের মুখে পড়লে পশ্চিমবঙ্গে শরণার্থী সমস্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। মমতা অবশ্য সোমবার বিধানসভায় জানিয়েছেন, ”অনেকে এখানে আসতে চাইছেন ওপার থেকে। কিন্তু সেটা বিএসএফ দেখছে। আমরা এই নিয়ে মন্তব্য করব না।”
মুখ্যমন্ত্রীর এও অনুরোধ, কেউ যেন কোনও প্ররোচনায় পা না দেন। উস্কানিমূলক কথাও কেউ না বলেন। এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের একাংশ এবং পরোক্ষভাবে বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেছেন, ”কয়েকটা মিডিয়া যা করছে তা যথাযথ নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে আপনাদের ব্যান করব। কিন্তু আবেদন করছি যথাযথ থাকুন। আর কিছু ফেক ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল করছে। রাজনীতি করবেন না।”
প্রসঙ্গত, বিএনপি নেতার বক্তব্য ছিল, ভারত যদি চট্টগ্রাম দখল করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশও বাংলা, ওড়িশা, বিহার দখল করে নেবে! তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম নিয়ে এমন কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তাই ওই বিএনপি নেতার মন্তব্যে একদিকে যেমন ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে, অন্যদিকে কেউ কেউ বিষয়টিকে হাস্যকর বলেও উড়িয়ে দিয়েছেন।
সোমবার অধিবেশনের প্রথম দিনই বাংলাদেশ ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী বাংলার অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে বাংলা যে কেন্দ্রের করা পদক্ষেপেই চলবে, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু এহেন বারবার হুমকির পর এবার তিনিও পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।