‘…দিনের শেষে আমি একজন ভারতীয়’, সোমবার ইদের সকালে রেড রোড থেকে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও উস্কানিতে পা না দেওয়ার জন্য আবেদনও করেন তিনি। একই সঙ্গে ধর্মের নামে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করার অভিযোগে বিরোধীদের কাঠগোড়ায় তুললেন মমতা। ভোটের জন্য ধর্ম নিয়ে কারবার করা রাজনীতিকদের ‘দোকান’ বন্ধ করার হুঁশিয়ারিও দেন মমতা। ইদের রেড রোডের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা গিয়েছে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
নাম না করে বিজেপিকে ‘দাঙ্গাকারী দল’ বলেও আক্রমণ শানালেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “একটা বিশেষ দল বাংলায় দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করে। ওদের একটাই আওয়াজ দাঙ্গা করো, কিন্তু এখানে আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই ভাই ভাই। এখানে বিভাজনের রাজনীতি বরদাস্ত করব না”।
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রেডরোডের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নেত্রীর সুরে অভিষেকও বলেন, “চাঁদের কোনও ধর্ম হয় না। আমৃত্যু একতা বজায় রাখতে হবে।”
এ প্রসঙ্গে অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজের ঘটনাও টেনে এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, “ওরা জানতে চেয়েছিল আমি হিন্দু কিনা? আমি পরিষ্কার বলেছি, আমি শুধু হিন্দু না, মুসলিম, শিখ, খ্রীশ্চান-সহ সব ধর্মের। এটাই বাংলার পরম্পরা। বাংলা মানেই সম্প্রীতি।”
এরপরই নাম না করে বাম-বিজেপিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ওরা একসঙ্গে টিকিট কেটে ওখানে গিয়ে ধর্মের রাজনীতি করতে চেয়েছিল। নতুন করে আবার দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করবে। প্ররোচনায় পা দেবেন না। মনে রাখবনুে, আপনাদের সঙ্গে দিদি রয়েছে। বাংলায় বিভাজনের রাজনীতি বরদাস্ত করব না।”
আগামী রবিবার রামনবমী। তার আগে হিন্দু ভোটারদের এককাট্টা করতে মরিয়া পদ্মশিবির। এবারে রামনবমীকে কেন্দ্র করে বাংলায় বড় কর্মসূচি নিয়েছে তারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, ওই দিন লক্ষাধিক মানুষকে রাস্তায় নামানোর ডাক দিয়েছেন।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, নাম না করে এ প্রসঙ্গেই বাংলার মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, অতীতে রাম নবমীর দিনে কলকাতা-সহ রাজ্যে একাধিক হিংসার ঘটনাও ঘটেছে।
প্রতিবারের মতো এবারেও রেডরোডের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই সকলকে একসঙ্গে বাংলার সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।