Mamata Banerjee   সৌরভ-শত্রুঘ্নকে পাশে নিয়ে মমতার প্রদীপ প্রজ্বলন ,মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন

0
40
হীয়া রায় , দেশের সময়

কলকাতা : ৩০ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন হয়ে গেল বুধবার। আলিপুরের ধনধান্য সভাগৃহে তার জন্য বসেছিল চাঁদের হাট।

একঝাঁক তারকা সমাবেশে সূচনা হল সিনেমার উৎসবের। উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশনায় ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘দীক্ষামঞ্জরী’। ৪ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই উৎসব। নন্দন থেকে শুরু করে শহরের সমস্ত সমস্ত প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে দেশ-বিদেশের একাধিক সিনেমা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শত্রুঘ্ন সিনহা এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতে হলো অনুষ্ঠানের প্রদীপ প্রজ্বলন।

৪১টি দেশের ১৪১টি সিনেমা দেখানো হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফোকাস কান্ট্রি ফ্রান্স।

৪১টি দেশের ১৪১টি সিনেমা দেখানো হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বারের ফেস্টিভালের চেয়ারপার্সন গৌতম ঘোষ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিক, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, সব্যসাচী চক্রবর্তী, দেব, দুলাল লাহিড়ীর মতো অভিনেতারা উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের মঞ্চে। উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হবে তপন সিনহা পরিচালিত সিনেমা ‘গল্প হলেও সত্যি’।

এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অতীতের স্মৃতিচারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এবারের ফেস্টিভ্যালে বিশেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে মনোজ মিত্র, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, গৌতম হালদার, সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তপন সিনহার মতো ব্যক্তিত্বদের। তাঁদের কথা বলতে গিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকে বলেন, ২৬ দিনের অনশনের সময়ে তাঁকে চিঠি লিখেছিলেন তপন সিনহা! অনশন প্রসঙ্গে বলেন, ”আজকের দিনে আমি ২৬ দিনের একটা অনশন শুরু করেছিলাম। তখন তপনদার সঙ্গে আমার আলাপ ছিল না। কিন্তু উনি আমাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন, আমার আন্দোলনকে অভিনন্দন জানিয়ে। সেই চিঠি এখনও রেখে দিয়েছি। এই হিসেবে তপনদাকে চিনতাম।”

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো ছিলেনই, পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শত্রুঘ্ন সিনহা, গৌতম ঘোষ, দেব, যীশু সেনগুপ্ত, জুন মালিয়া থেকে শুরু করে চিরঞ্জিত, শতাব্দী রায়, পাওলি দাম, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিক, দুলাল দে, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশানি মুখোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া ছিলেন টেলিভিশনের একাধিক কলাকুশলীরা। অন্যদিকে, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনার মতো দেশের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন উদ্বোধনী অনু্ষ্ঠানে।

ফেস্টিভাল সম্পর্কে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এই নিয়ে তৃতীয়বার আমি ফেস্টিভালে এলাম। প্রতি বছর আমায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমি আপ্লুত। এই সুন্দর মুহূর্ত আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায় বারবার।’

একেবারে বাংলায় নমস্কার দিয়ে শুরু করলেন শত্রুঘ্ন সিনহা। বললেন, ‘আমি পাটনার লোক। তাও বাংলায় কথা বলার চেষ্টা করছি। ভুল হলে ক্ষমা করবেন। মমতাময়ী, আয়রন লেডি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ওঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। স্মরণ করলেন ঋত্বিক ঘটক, সত্যজিৎ রায়কে। একটা ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে গেল, যে মানিকদার সঙ্গে কাজ করতে পারলাম না। কথা হয়েও কাজ হয়নি।’

বাংলার সঙ্গে তাঁর নিবিড় যোগের কথা উল্লেখ করে শত্রুঘ্নর সংযোজন, ‘মঞ্চে রয়েছেন আমার বন্ধু ও গুরু গৌতম ঘোষ। কাজ করার আনন্দ পেয়েছি, সেই সঙ্গে প্রচুর শিখেছি। ‘অন্তর্জলী যাত্রা’য় কাজ করতে পেরেছি ওঁর সঙ্গে। যা আমার হৃদয়ে থেকে যাবে আজীবন।’ প্রশংসায় ভরালেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিক, দেবকেও। কলকাতার দুর্গাপুজো থেকে বাংলা ভাষার প্রশংসাও শোনা গেল তাঁর মুখে। বললেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই এবং ওঁর জন্যই এই ভাষা বিশ্বের দরবারে বিপুল মর্যাদা পেয়েছে। যাই হয়ে যাক, আমি সব সময় আপনাদের ছিলাম, আপনাদের আছি, আপনাদের থাকব।’

কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এবারের থিম কান্ট্রি ফ্রান্স। সে দেশের ২১টি ছবি দেখানো হবে। উদ্বোধনী ছবি হিসেবে দেখানো হচ্ছে তপন সিনহার ‘গল্প হলেও সত্যি’। আর এই অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন জুন মালিয়া এবং যীশু সেনগুপ্ত। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, বিদেশি ছবির পাশাপাশি বাংলা ছবিকেও যেন গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, বাংলায় অনেক প্রতিভা আছে। বিদেশি কলাকুশলীদের সঙ্গে বাংলা তথা ভারতের কলাকুশলীরা কাজ করলে অনেক বেশি কাজের পরিসর বাড়বে। ভারতীয় সিনেমাও উপকৃত হবে।

এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরেও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। পরিচালক ইন্দিরা ধর মুখোপাধ্যায়ের ছবির ‘ইতি মা’ গানটি মনোনীত হয়েছে অস্কার নমিনেশনের টপ ৭৯ গানের তালিকায়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন খোদ পরিচালক ও সুরকার। চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনে যোগ দিতে পারেননি তাঁরা।

ধনধান্য স্টেডিয়ামের বাইরে মোতায়েন পুলিশকর্মীরা তাঁদের জানান, অত্যন্ত ভিড়ের কারণে ভিতরে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণে আমন্ত্রণের কার্ড থাকা সত্ত্বেও, মুখ্যমন্ত্রীর পাশে রিজার্ভড আসন সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ভিতরে প্রবেশ করতেই দেওয়া হয়নি।

Previous articleMSME CAMP রাজ্যে চলছে ‘শিল্পের সমাধানে’ কর্মসূচি, বনগাঁ ব্লকে ক্যাম্প! কী কী সুবিধা মিলবে? দেখুন ভিডিও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here