
চাকরি হারা গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের যে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার আর্থিক সহায়তা করবে, এ কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মমতা জানিয়ে দিলেন এ ব্যাপারে শ্রম দফতরের অধীনে নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তা থেকেই চাকরি হারানো শিক্ষাকর্মীদের ‘অনুদান’ দেবে রাজ্য। গ্রুপ সি কর্মীরা পাবেন মাসে ২৫,০০০ টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা পাবেন মাসে ২০,০০০ টাকা।
আদালতে যত দিন মামলা চলবে, তত দিন চাকরি হারানো শিক্ষাকর্মীদের সংসার চালানোর জন্য রাজ্য সরকার এই সহায়তা দেবে। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হবে। মন্ত্রিসভার সিলমোহরের পরেই এপ্রিলের অর্থ তাঁরা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে এসএসসির (SSC 2016) ২০১৬ সালের আস্ত প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার জেরে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী মিলিয়ে প্রায় ২৬ হাজার মানুষ কর্মহারা। এদের মধ্যে শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোনও সময় দেয়নি আদালত।

নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনিবার্য পরিস্থিতিতে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাওযায় লেবার ডিপার্টমেন্টের অধীনে একটি স্কিমে যথাক্রমে পয়লা এপ্রিল ২০২৫ থেকে প্রতি মাসে আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ওদেরও তো সংসার রয়েছে। যতক্ষণ না সমস্যার সমাধান হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের সরকার এই অনুদান দেবে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও বলেন, “কেউ কেউ বলবে দরকার নেই, এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে আমাদের সরকার সবার কথা ভাবে, তাই এই সিদ্ধান্ত।”
একই সঙ্গে নাম না করে বিরোধীদের কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে তো অনেকে কথায় কথায় পিল খায়, পিল খেয়ে কিল দেয় মানুষকে। খেতে দেওয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই! এই জন্যই আমাদের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুদানের স্কিম চালু করলাম।”

২০১৬ সালের নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। হাইকোর্ট প্রথমে আস্ত প্যানেল বাতিল করে দিয়েছিল। পরে সুপ্রিমকোর্টও একই নির্দেশ বহাল রাখে। তবে রাজ্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষা পরিকাঠামোর কথা ভেবে চাকরিহারা শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। ওই সময়ের মধ্যে রাজ্যকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাও দায়ের হয়েছে।