দেশের সময় পুরুলিয়ার হুড়ার জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের জবাব দিতে রবিবার জলপাইগুড়ির মঞ্চকেই বেছে নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার মোদীর আক্রমণের পাল্টা জবাব দিতে বাঁকুড়া রাইপুরের প্রচারমঞ্চকে বেছে নিলেন মমতা। সোমবার রাইপুরে বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীর সমর্থনে সভা করেন তিনি। গত কয়েক দিনের মতো সোমবারও কেন্দ্রীয় এজেন্সির ‘অপব্যবহার’ এবং ‘বিরোধীদের কণ্ঠরোধ’ করার অভিযোগ তুলে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। কেন্দ্রের শাসকদলকে খোঁচা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, “নতুন সংসদ ভবনকে জেলখানায় পরিণত করুন।”
বিরোধীদের কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে, হেনস্থা করা হচ্ছে। এই অভিযোগ নতুন নয়। বাঁকুড়ার সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গেই এবার বললেন, গোটা দেশকেই তো জেল বানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। নাম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করলেন তিনি।
সোমবার বাঁকুড়া জেলার রাইপুর থেকে জনসভা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ”প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এই ভাষা শোভা পায় না। বলছে, ৪ জুনের পর সবাইকে গ্রেফতার করবে, জেলে ভরবে। এখনই তো গোটা দেশ জেল হয়ে গেছে। গণতন্ত্রকে জেল বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এরপরই কেন্দ্রীয় এজেন্সির নাম নিয়ে মোদীকে আক্রমণ করেন তিনি।
মমতার দাবি, প্রধানমন্ত্রীর এক পকেটে এনআই, অন্য পকেটে সিবিআই। আর এক পকেটে ইডি, আবার অন্য পকেটে ইনকাম ট্যাক্স। এনআইএ-সিবিআই ভাই-ভাই আর বাকি এজেন্সি দিয়ে ফান্ড কালেকশন চলছে। মোদীর উদ্দেশে মমতার হুঁশিয়ারি, ”আমরা আপনাকে ভয় পাই না। কিন্তু এইভাবে জেলে ভরার হুমকি দেবেন না।” এই প্রসঙ্গেই মমতার কটাক্ষ, নতুন সংসদ ভবনকে জেলে পরিণত করুন, তারপর সবাইকে জেলে ভরে দিন।
বিরোধী নেতাদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কথা টানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্তব্য করেন, বিজেপির যদি ক্ষমতা থাকে তাহলে স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে জিতুক। ভয় দেখিয়ে, জেলে ভরে জিতবে কেন। যদিও মমতার দাবি, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের দল আগের থেকেও বেশি ভোটে জিতবে।
বাঁকুড়ার সভা থেকে জেলারই আর এক লোকসভা কেন্দ্র বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদকে সৌমিত্র খাঁকেও আক্রমণ করেন মমতা। তাঁর নাম না করেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জানি না ডিভোর্স হয়েছে কি না। তাঁর স্ত্রী দাঁড়িয়েছে সেখানে। তাঁর যদি আমি ফোটোগুলো খুলি, তা হলে বিষ্ণুপুরের মানুষ বুঝবেন, বিজেপি কত আদর্শবান দল। সব ছবি আমার কাছে আছে।” প্রসঙ্গত, সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলকে এ বার বিষ্ণুপুর আসনে প্রার্থী করেছে তৃণমূল।