দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাঙালিদের পর্যটনের তালিকার মোটামুটি শীর্ষেই থাকে পুরী। তাই ভিন রাজ্যে বাঙালির সুবিধার্থে পুরীতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গেস্ট হাউস তৈরির ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সম্প্রতি এক প্রশাসনিক সভা থেকেই পুরীতে রাজ্যের গেস্ট হাউস তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা।
সেই সূত্রেই যাওয়া। এদিন সেখানে দাঁড়িয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কিছুটা বাংলা-ওড়িয়া মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খুশি আছুন্তি। জমি দেখুন্তি, পছন্দ হুন্তি। কাল নবীনজিকে সাথ মিলুন্তি’।
সারা বছর বাঙালিদের ভিড় লেগেই থাকে পুরীতে। সবচেয়ে বেশি পর্যটক এ রাজ্য থেকে যান এই সৈকত শহরে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেকদিন ধরেই আমার ইচ্ছে ছিল পুরীতে রাজ্য সরকারের একটা নিবাস বানানোর। এবার সে সেটা পূর্ণতা পেতে চলেছে”।
যে এলাকায় এদিন মুখ্যমন্ত্রী জমি দেখেছেন সেটি নিউ পুরীতে। অর্থাৎ স্বর্গদ্বার মেরিন ড্রাইভ রোড ধরে কিছুটা যাওয়ার পর এই এলাকা। কতটা জমি পাওয়া যাবে তা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন জমি চিহ্নিত করার জন্য পুরীর জেলাশাসক ও মুখ্য সচিব তাঁকে সঙ্গ দিয়েছেন। তিনি এর জন্য ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীণ পট্টনায়েককে ধন্যবাদও জানান। জমি খতিয়ে দেখে তা পছন্দও হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা৷
তিনি জমি পরিদর্শন করে আরও বলেন, “জায়গা আমার পছন্দ হয়েছে। এখানে নয়া বিমানবন্দর হবে। একটা সেতুও হচ্ছে এখানে। আপনাদের জানা আছে, বাঙালি পর্যটক এখানে সারাবছর আসে। কখনও কখনও ওদের থাকার জায়গা পাওয়া যায় না।” তিনি বলেছেন, রথে ও স্নানযাত্রায় এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ আসেন। সেই সময় অনেক ক্ষেত্রেই হোটেলে জায়গা পাওয়া যায় না। তাই তিনি এখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি গেস্ট হাউস করতে চান। আর জমির বিষয়ে আগামিকাল নবীণ পট্টনায়েকের সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি তিনি রাজনৈতিক বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জমি পাওয়ার বিষয়টিতে ওড়িশা সরকার সিলমোহর দেওয়ার পরেই পুরীতে রাজ্য সরকারের বাড়ি নির্মাণ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা এও বলেন, মাটি পরীক্ষা, বিল্ডিং প্ল্যান ইত্যাদির বিষয় রয়েছে। কারণ সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় অনেক বিধি মেনে বাড়ি তৈরি করতে হয়। সেসব করতে যা সময় লাগে সেটুকুই লাগবে। তারপরেই পুরীতে মাথা তুলবে রাজ্য সরকারের অতিথি আবাস।
এর মধ্যে আগামিকাল ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীণ পট্টনায়েকের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর।
শুধু পুরী নয়, মুম্বইতেও একটি বঙ্গভবন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সে ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে জমি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। তখন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন উদ্ধব। মহারাষ্ট্রে উদ্ধবের সরকারের পতনের পর বিজেপির জোট সরকার এখন ক্ষমতায়। পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া কথা বর্তমান সরকার রাখে কিনা সেটাও দেখার।