দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আজ, মঙ্গলবার দার্জিলিং ম্যাল চত্বরে জিটিএ’র শপথ অনুষ্ঠান হবে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। সেখানে পাহাড়ের বিভিন্ন জনজাতি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান থেকে শুরু করে বিশিষ্টরা ডাক পেয়েছেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে ধূপগুড়িতে সভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মোর্চার দাবি, প্রাক্তন জিটিএ প্রধান হিসাবেও ওই অনুষ্ঠানেও ডাক পাননি বিমল গুরুং। তিনি পাতলেবাসেই বসে রয়েছেন। পাহাড় এমন ভাবেই বিমল গুরুংদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে যে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্যও করতে নারাজ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি।
এদিন যোগাযোগ করা হলে তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। সোমবার বাগডোগরা বিমান বন্দরে নামার পরে সংবাদ মাধ্যমের সামনে কোনও মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রীও।
জিএনএলএফ সাফ জানিয়েছে, তাঁরা জিটিএ’র শপথ অনুষ্ঠানে যাবেন না। বিজেপি’র দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত বলেছেন, ‘জিটিএ অসাংবিধানিক। শপথ অনুষ্ঠানে হাজির থেকে মুখ্যমন্ত্রী সেটাকেই আইনি বৈধতা দিতে চাইছেন।’
তবে ২১ জুলাইয়ের আগে কর্মীদের বার্তা দিতে শাসক দলের দুই হেভিওয়েটের প্রস্তুতি তুঙ্গে৷ দুই শীর্ষ নেতার রাজনৈতিক সভা ঘিরে নজর রয়েছে সকলের। শাসক দলের দুই হেভিওয়েটের উত্তরবঙ্গ সভা ঘিরে তাই জমজমাট রাজনৈতিক মহল। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে পাহাড়ে অশান্তির আগুন জ্বলে ওঠে ৷ পাহাড়ের মানুষ দীর্ঘ বনধের রাজনীতি দেখে এসেছে। যদিও ধীরে ধীরে অবস্থা বদলেছে বিগত নয় বছরে।
পাহাড়ের একাধিক রাজনৈতিক দলকে নিয়ে চলতি বছরের মার্চ মাসে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ, বিজেপির মতো রাজনৈতিক দল জিটিএ নির্বাচনে লড়াই না করলেও, পাহাড়ের একাধিক আঞ্চলিক দল এতে যোগ দেয়।
শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। শেষমেষ পাহাড়ের উন্নয়নে জিটিএ বোর্ড যে জরুরি তা বুঝিয়ে দেয় প্রশাসন। এমনই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আগামী দিনে পাহাড়ের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে পারেন তিনি ৷ এ ছাড়া পাহাড়কে কেন্দ্র করে একাধিক উন্নয়নের বার্তাও শোনা যেতে পারে তাঁর গলায়।পাহাড়ে অশান্তি নয়, পাহাড়ের উন্নয়ন হলে যে অর্থনৈতিক পথ সুগম হবে সেই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে রাজ্য প্রশাসন।
অন্যদিকে দীর্ঘ দিন ধরে দার্জিলিং লোকসভা আসন বিজেপির দখলে। অনীত থাপার দলকে জিটিএ চালাতে সাহায্য করবে তৃণমূল কংগ্রেস। এই বার্তা দেওয়া হয়েছে। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পাহাড় সফরে প্রশাসনিক উন্নয়নের পাশাপাশি, এখন থেকেই যে ২০২৪-এর রাজনৈতিক লড়াই শুরু হয়ে যেতে পারে সেই বার্তা স্পষ্ট।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের মতো জেলাতে ভাল ফল করলেও, লোকসভা থেকে বিধানসভা খারাপ ফলের কারণ কি তা নিয়ে কাঁটাছেড়া করেছে শাসক দল। তৃণমূল কংগ্রেস এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে অন্যতম বিজেপি বিরোধী দল।
ফলে আগামী দিনে এই রাজ্যের অন্যতম বিজেপি ঘাঁটি উত্তরবঙ্গে এখন থেকে ফাটল ধরাতে চাইছে জোড়া ফুল শিবির। তাই আজকের সভা থেকেই অভিষেক সুর চড়াতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷