দেশের সময় , কলকাতা : :গোটা দেশ মেতে উঠেছে আলোর উৎসবে। একান্নটি সতীপীঠ তো বটেই বাড়ির পুজো থেকে বারোয়ারি, কালীপুজোর দিনে বিশেষ নজর থাকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতেও।
প্রত্যেক বছর স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নিজের বাড়ির পুজোর তদারকি করেন। ভোগ রাঁধেন। সাজিয়ে তোলেন মা কালীকে। এবছরও তার ব্যাতিক্রম নয়। বাড়ির ছোট্ট মণ্ডপে এবছরও ব্যস্ত তিনি।
৪৭ বছরে পা দিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজো। সকাল থেকেই পুজোর আয়োজনে তদারকি করেছেন তিনি। পুজো উপলক্ষে ৩০, বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়িতে ছিল সাজ সাজ রব। পুজোর আচার অনুষ্ঠানের বিভিন্ন কাজ নিজ হাতে সারতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। রান্না করলেন মায়ের ভোগও।
হলুদ-লাল শাড়ি, সোনার গয়নায় ‘দিগম্বরী’র ছবি পোস্ট করেছেন মমতা। সকালে বাংলার মানুষকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছিলেন। এবার সন্ধেবেলা কালী আরাধনার ছবি দেখা গেল। বাড়ির সামনে লেখা রয়েছে ‘শুভ দীপাবলি’। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের হাতে আঁকা ছবিও দেখা গেল সেখানে।
কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির পুজোয় এলেন তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর চোখে কালো চশমা। বৃহস্পতিবার রাতে কন্যা আজানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কালীঘাটে পৌঁছন।
সকলের জন্য মায়ের আশীর্বাদ প্রার্থনা করে মমতা সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘আমার বাড়ির ব্রহ্মময়ীর চরণে শতকোটি প্রণাম জানাই। মায়ের স্নেহাশিসে মা-মাটি-মানুষের কল্যাণ হোক – এই প্রার্থনা আমার। ১৯৭৮ সালে প্রথম আমার মা এই পুজো শুরু করেন। এই বছর তা ৪৭ বছরে পা দিল। আমি যেন আজীবন এইভাবেই মায়ের সেবা করতে পারি – মায়ের চরণে এই কামনা আমার।’
বছর আর পাঁচটা দিনে চূড়ান্ত প্রশাসনিক ব্যস্ততা থাকলেও পুজোর দিনটায় ঘরের মেয়ের ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে। বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে মায়ের ভোগ রান্না করতেও হাত লাগান তিনি। ভোগ রান্নার ছবি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করে মমতা বলেন, ‘দীপাবলির পুণ্যলগ্নে মা করালবদনার আরাধনায় সামিল আপামর জগৎ। মা কালীর পুণ্যাশিসে এবং দীপের আলোর ছটায় আলোকোজ্জ্বল চারিদিক। আজ আমাদের বাড়ির মায়ের ভোগ রান্না করলাম।’
পুজোয় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি অতিথি আপ্যায়ন করতেও দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। নজর রাখেন অতিথিদের সুযোগ সুবিধার দিকেও। সন্ধ্যা থেকেই সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে তারকা, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ভিড় লেগেই ছিল তাঁর বাড়িতে।
এদিন পুজোয় ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার মতো প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। তা ছাড়া, তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা, সাংসদ, বিধায়কদেরও পুজোয় উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে।
অভিষেকের মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকীমা কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়রাও মমতার বাড়ির পুজোয় প্রথম থেকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের পুজোর জোগাড়ের কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে।