Mamata Banerjee: পার্থ চোর কিনা বিচার হবে, তাই বলে অভিষেক চোর? মেয়ো রোডে গর্জে উঠলেন মমতা!

0
725

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নজিরবিহীন আক্রমণে বিরোধী শিবিরকে কার্যত তীব্র হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বিরোধীদের এক অর্থে তুলোধোনা করলেন মমতা। দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ইস্যুতে একের পর এক বিরোধী শিবিরের আক্রমণের এক অর্থে জবাব ছুড়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর ও তাঁর দলের বহুদূর পর্যন্ত কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তৃণমূল সুপ্রিমোর।

তাঁর বিরুদ্ধে আঙুল তোলার আগে বিরোধীদের সতর্ক করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “আমার এভিডেন্স দেওয়া আছে। আমাকে দেখান। আমি এমপি হিসাবে পেনশন নিই না। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এক পয়সাও নিইনি। যোগ করে দেখবেন কত হল। সরকারি গাড়ি কম চড়ি। আমার বাড়ি, ঠিকাসত্ত্ব। আইন অনুযায়ী আমি প্রজা।”

একইসঙ্গে তাঁর কবিতার বই নিয়ে বিজেপি-সিপিএমের বার বার খোঁচার জবাব দিতেও ছাড়েননি মমতা। তিনি বলেন, “আমি কেন বই বিক্রি করব সেটাও ওদের জ্বালা। গিয়ে দেখো, বইমেলায় কেন বই আমার বেশি বিক্রি হল? লিখুন না বই! ১০০০ কবিতার বই লিখে দেখান! মমতা আরও বলেন, “পুরষ্কারের প্রতি কোনও লোভ নেই আমার। কেন ব্রাত্য আমায় পুরষ্কার দিল তা নিয়েও ওদের আপত্তি।”

এদিন সমাবেশে বক্তব্য রাখতে উঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে উঠে এল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। ইডি-র হাতে গ্রেফতারির পর এর আগে পর্যন্ত পার্থর নাম মুখে আনেননি মমতা। কিন্তু মেয়ো রোডের সভা থেকে এদিন কেন্দ্রকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে মমতার মুখে উঠে এল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কথাও। তিনি বলেন, ”পার্থ-অনুব্রত-ববি চোর, আর আপনারা সাধু!” এর আগে অনুব্রতর পাশে সরাসরি দাঁড়ালেও এদিনই প্রথম পার্থর পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূল নেত্রী।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে যে তিনি নেই তা গোড়াতেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আবার স্বাধীনতা দিবসের প্রাক সন্ধ্যায় বেহালার সভা থেকে মমতা এও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে রয়েছেন। সোমবার মেয়ো রোডে ছাত্র সমাবেশ থেকে সেই কথাটাই আরও সুস্পষ্ট করে বলতে চাইলেন দিদি।

এদিন টিএমসিপির সমাবেশে মমতা আরও বলেন, “পার্থ চোর কিনা সেটা বিচার হবে। তাই বলে কেষ্ট চোর, ববিও চোর, অরূপও চোর, অভিষেকও চোর, মমতা ব্যানার্জিও চোর, মেয়ো রোডও চোর, রেড রোডও চোর? আর তোমরা সব সাধু?”

সেইসঙ্গে মমতা এও প্রশ্ন তোলেন, কিছু হলেই তাঁর গায়ে কালি ছেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের একাংশের ভূমিকা নিয়েও এদিন সরব হন তৃণমূলনেত্রী। মমতা বলেন, “পার্থর দোষ হলে মমতাকে টেনে আনবে, ববির ব্যাপার হলেও মমতা ব্যানার্জিকে টেনে আনবে…!” এদিন ফের একবার অনুব্রতকে সার্টিফিকেট দিলেন মমতা।

গরুপাচার মামলায় জেলবন্দি নেতার সম্পর্কে বলেন, “কেষ্টর মতো সাহায্যকারী ছেলে আমি দেখিনি!”
সেইসঙ্গে শিক্ষা দুর্নীতি নিয়ে সিপিএমকেও তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। তৃণমূলনেত্রী বলেন,”আমাদের দশ বছরে এক লক্ষ ৬৩ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন। আর সিপিএম আমলে কী হয়েছিল? সেই তালিকা কোথায়? আলমারি কোথায় কমরেড? সিপিএম তো গোটা ৩৪ বছরটাই চুরি করে খেয়েছে!’

মমতার এই কথার প্রতিক্রিয়ায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলরা তো সবাই সিপিএমের নেতা ছিলেন। চুরি করেছেন, জেলে গেছেন!”

অনেকের মতে, মমতা দলের তরুণ ব্রিগেডের সামনে দুটি বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তা হল, খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিরোধীদের কুৎসার জবাব দিতে হবে রাজনৈতিক ভাবে। সেইসঙ্গে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, এখনও তাঁর ব্যক্তি সততাই তাঁর রাজনীতির পুঁজি। সেটায় কেউ আঘাত হানতে চাইলে পাল্টা আঘাত ফিরিয়ে দিতে হবে।

মমতার কথায়, ”ইডি-সিবিআই-কে আমি সম্মান করি। কিন্তু কিছু কিছু ইডি-সিবিআই আধিকারিকও দুর্নীতিতে যুক্ত। আমাদের পুলিশকে দিল্লি কিছু করতে গেলে আইনি লড়াইয়ে যাব। আমরা খেয়াল রাখছি, লিস্ট তৈরি রাখছি। আমাকেও চোর বলা হচ্ছে, কিন্তু ”

এদিন রুদ্রমূর্তি ধারণ করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বড় বড় কথা। আমি রাজনীতিতে এসেছি সমাজসেবা করব বলে। কয়েকটা ভাড়া করা, চোর ধাপ্পাবাজ নেতাদের সাহায্যে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের গায়ে কালি ছেটাও। বিজেপি দল এই আট বছরে দেশটাকে বারোটা বাজিয়েছে। কোটি কোটি টাকা দিয়ে নিজেদের ভান্ডার ভরাচ্ছে।”

Previous articleBangladesh: বাংলাদেশে ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে আগ্রহী ৯ ভারতীয় কোম্পানি
Next articleAR Rahman: সুরকার এ আর রহমানের নামে কানাডায় সড়কের নামকরণ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here