কলকাতা : বছর শেষের মুহূর্তে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্ন সভাগৃহ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন জেলায় জেলায় শপিং মল তৈরি করা হবে। সেই উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগপতিদের জমির ব্যবস্থা করে দেবে রাজ্য সরকার। তবে সেই শপিং মলগুলি দুটি তল পৃথকভাবে রাখতে হবে স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য ও আর্টিজানদের জন্য। এরফলে জেলায় জেলায় স্থানীয় স্তরে অর্থনীতি অনেক মজবুত হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিক বৈঠকে বাস্তব জীবনের একটি অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জেলায় তাকে একবার এক যুবক আশান্বিত হয়ে একটি চিরকুট দিয়েছিলেন। তাতে লেখা ছিল আমাদের জেলায় কী শপিং মল হবে না ? এই ঘটনা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতা শহর বা তার আশেপাশের আধুনিক শপিং মলের মতোই জেলার শপিং মলে থাকবে ক্যাফেটেরিয়া, থাকবে রেস্তরাঁ। এছাড়াও থাকবে আধুনিক সিনেমা হল। মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, এরফলে জেলাস্তরে বাংলা ছবির ডিস্ট্রিবিউশন আরও বেশ কিছুটা বাড়বে।
এইজন্য জমি চিহ্নিত করে দেবে রাজ্য সরকার। তারই প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আওতায় থাকা আলিপুর চিড়িয়াখানার উল্টোদিকের খালি জমিতে একটি শপিং মল তৈরির কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও আলিপুর সংগ্রহশালার উল্টোদিকের জমিতে চামড়াজাত দ্রব্যের একটি সরাসরি বিক্রয় কেন্দ্রের কথাও ঘোষণা করেন। আর সেখানেই তৈরি হবে বাংলার শাড়ির বিক্রয় কেন্দ্র। বিভিন্ন জেলা থেকে তাঁতশিল্পীরা এখানে তাদের উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রি করতে পারবেন।
আগামী কয়েকদিন টানা কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি জানান,আগামী ৩০ ডিসেম্বর সন্দেশখালি যাবেন তিনি। ওই দিন দুপুর ১টায় সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মমতা। সেখানে দুঃস্থদের হাতে জামাকাপড় তুলে দেওয়া হবে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন তিনি। এর ফলে প্রায় সন্দেশখালির প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দা উপকৃত হবেন।
আগামী কয়েকদিন টানা কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি জানান, ৫ এবং ৬ জানুয়ারি বেঙ্গল বিজনেস গ্লোবাল সামিট (বিজিবিস) রয়েছে। বিজিবিস-এর শেষ দিনে অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যাবেন মমতা। ওই দিন ভারত সেবাশ্রম এবং কপিলমুনির আশ্রমেও যাবেন। ৮ জানুয়ারি মিলেনিয়াম পার্ক থেকে ই-ভেসেলেরর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ভেসেলে জলপথে হাওড়া থেকে দক্ষিণেশ্বর এবং বেলুড় মঠে যাতায়াত করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এ বছরের শুরুতে উত্তপ্ত হয়েছিল সন্দেশখালি। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে তল্লাশির সময় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর আধিকারিকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান এবং তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
শাহজাহান ও তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং জোর করে ভয় দেখিয়ে জমি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। লোকসভা ভোটে এর কোনও প্রভাবই পড়েনি তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে। পাঁচ লক্ষের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন তৃণমূলের প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। হেরে যান বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। লোকসভা ভোটের ফলের ছয় মাস পর সন্দেশখালিতে যাবেন মমতা।