কলকাতা:আবারও বঙ্গভঙ্গ ইস্যু নিয়ে সরগরম বাংলা। বিজেপি সাংসদ থেকে বিধায়ক কেউ সংসদে কেউ আবার সাংবাদিকদের সামনে বাংলা ভাগের প্রস্তাব রেখেছেন। তবে রাজ্যের শাসকদল বরাবরই বঙ্গবঙ্গ বিরোধী সুর তুলেছে। আর সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানালেন তিনি বাংলা ভাগ মানছেন না।
বিজেপির বিরুদ্ধে আবার বাংলা ভাগ করার চক্রান্তের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে সরব হয়েছে। এবার এই প্রসঙ্গে সোমবার বিধানসভায় ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, কেউ আসুক বাংলা ভাগ করতে, দেখা যাবে কার কত দম।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের আট জেলাকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করার দাবি তুলেছেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। অন্যদিকে, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বাংলার দুই জেলা মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ-সহ ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের ডাক দিয়েছেন।
দুই সাংসদের এই দাবি নিয়ে আবার তোলপাড় শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে বিধানসভায় বলেছেন, ”গণতন্ত্রে জনতাই শেষ কথা। যে সব বিধায়করা বাংলা ভাগ করার কথা বলবে বা বলছে তাঁরা বিধানসভায় আসুক। কার কত ক্ষমতা দেখা যাবে।”
মমতার কথায়, ”আগে আমি এসব দেখিনি। এই বিজেপি সরকার আসার পরই এটা দেখছি। নির্বাচন আসলেই শুধু বিভাজনের প্রশ্ন। ভোট এলেই বিজেপি বাংলা ভাগ করার কথা বলে। গোর্খাদের, জনজাতিদের আলাদা করে দিতে চায় তারা। এমনকি তফশিলি, মতুয়াদের আলাদা করার ভাবনাও নেয় তারা।
কিন্তু বাংলায় কোনও ভাগাভাগির প্রশ্ন নেই”, স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাফ কথা, বিধানসভাকে এড়িয়ে বাংলা ভাগের কথা বলা যাবে না। এক্ষেত্রে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে বিধানসভায় আলোচনা চেয়েছেন তিনি। দাবি করেছেন, ভোটাভুটি হোক তখন দেখা যাবে কার কত দম।
গত শুক্রবার দিল্লি যাওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ”অসম, ঝাড়খণ্ড, বাংলাকে ভাগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশকে টুকরো টুকরো করে দেওয়ার চক্রান্ত, তা মেনে নেওয়া যায় না।” তবে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে যে অভিযোগ করেছেন তা বিস্ফোরক।
তাঁর দাবি, বাংলাদেশের অনুপ্রবেশের কারণে নাকি বাংলা ও বিহারের জনসংখ্যার বিন্যাস বদলে যাচ্ছে। এমন চলতে থাকলে হিন্দুদের অস্তিত্বই থাকবে না। এরপরই বাংলা ও বিহারের এই পাঁচ জেলাকে নিয়ে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির দাবি জানান তিনি।