দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নবযুগের সূচনা হল কংগ্রেসে।২৪ বছর পর ফের গান্ধী পরিবারের বাইরের একজন দলের সভাপতির ভার নিলেন। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সাত হাজারেরও বেশি ভোটে জিতে কংগ্রেস সভাপতির পদ পেয়েছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।গান্ধী পরিবারের উপস্থিতিতে বুধবার সভাপতি পদে দায়িত্ব নিলেন তিনি। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী। ভারত জোড়ো যাত্রা থেকে বিরতি নিয়ে এদিনের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন রাহুল। শপথগ্রহণের আগে এদিন প্রথমে গান্ধীজির সমাধিস্থলে যান নয়া নির্বাচিত সভাপতি। সেখানে প্রণাম সেরে তারপর মঞ্চে ওঠেন।
সভাপতি হওয়ার পর নিজের প্রথম ভাষণে তিনি ধন্যবাদ জানান প্রাক্তন সভাপতি সনিয়া গান্ধীকে। দলের একজন সাধারণ কর্মী থেকে সভাপতি হয়ে ওঠার যাত্রার কথাও এদিন শোনা যায় খাড়গের মুখে। সভাপতি হওয়ার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান সনিয়াও। ৮০ বছরের অভিজ্ঞ নেতার নেতৃত্বে দলের ঘুরে দাঁড়ানোর কথাও বলেন তিনি। বর্তমানে কংগ্রেস যে অন্যান্য দলের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে তা বলতেও দ্বিধাবোধ করেননি প্রাক্তন সভাপতি। তবে কংগ্রেস কখনোই পরাজয় মেনে নেয়নি। সেই প্রসঙ্গ ধরেই বর্তমান বিজেপি সরকার এবং আরএসএসকে সরাসরি আক্রমণ করেন খাড়গে।
তাঁর মতে, বিজেপি সরকার ভারতকে মিথ্যের পথে নিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে ভারতের সাধারণ নাগরিকদের আবার সত্যের রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করবে কংগ্রেস। তাছাড়া জনসংযোগের জন্য রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার কথাও বলেছেন তিনি।
এর আগে কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা পুষ্পস্তবক দিয়ে খাড়্গেকে স্বাগত জানান। এই তালিকায় উল্লেখযোগ্য হল বিদায়ী অর্ন্তবর্তী সভাপতি সনিয়া গান্ধী এবং প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী। ভারত জোড়া যাত্রা তিন দিনের জন্য বন্ধ রেখে গতকাল রাতে তেলেঙ্গানা থেকে দিল্লি ফিরে আসেন রাহুল নতুন সভাপতিকে স্বাগত জানাতে। খাড়্গেকে সভাপতির চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে দলীয় দফতর থেরে বেরোনোর মুখে সনিয়া হাল্কাচালে বলেন, ভার মুক্ত হলাম। দলের সভাপতির দায়িত্বের বোঝা আজ থেকে খাড়্গেজির মাথায় চাপল।
প্রসঙ্গত, বিগত ২৪ বছরের মধ্যে সনিয়া ২২ বছর সভাপতি ছিলেন। এত দীর্ঘ সময় আর কেউ সভাপতি চেয়ারে থাকেননি কংগ্রেসে। মাঝে ২০১৭ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন রাহুল। সভাপতি পদে সনিয়া একবারই নির্বাচনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। বাকি দফা ভোট হয়নি। রাহুলও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হন।
খাড়্গের সভাপতি হওয়ার পর্বে অনেকগুলি পরিবর্তন এক সঙ্গে হল। অগান্ধী সভাপতির পাশাপাশি ২২ বছর পর তিনি নির্বাচনে জয়ী হয়ে দলের শীর্ষপদে বসলেন। জগজীবন রামের পর কংগ্রেসের দ্বিতীয় দলিত সভাপতিও খাড়্গে।
তিনি আজ দলীয় দফতরে আসার আগে প্রথম রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিকে শ্রদ্ধা জানান। এরপর বিআর আম্বেদকর, জগজীবন রাম, জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী এবং রাজীব গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে দলীয় দফতরে পার্টির পতাকা উত্তোলন করেন।
কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সভাপতি পদে খাড়্গের অভিষেকে। তবে নির্বাচনে তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শশী তারুর ছিলেন কি না, জানা যায়নি।