দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃভোট আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে অতি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে দলবদলের ‘খেলা’।
বুধবার বিকেল সওয়া চারটে। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সামনে দাঁড়িয়ে রাখঢাক না রেখে তাপস রায় জানিয়েছিলেন, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, আর কিছুক্ষণ পরেই। একই সঙ্গে পুরনো দলের সহকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, বিজেপি নিয়ে কু-কথা বললে যোগ্য জবাব দেব।
বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিট। সল্টলেকে বিজেপির পার্টি অফিসে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নেওয়ার পর মাইক হাতে তাপস রায়ের ঘোষণা, আমি এখন থেকে বিজেপি এবং মোদী পরিবারের সদস্য হলাম। যতদিন রাজনীতিতে থাকব, এই পরিবারের সদস্য হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালনে কোনও খামতি রাখব না। আনুগত্যে থাকবে না কোনও ফাঁক।”
তাপস রায়ের সঙ্গে এদিন বিজেপি অফিসে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় কিছু নেতা এবং কয়েকজন কাউন্সিলরকেও। অর্থাৎ অনুগামী নিয়েই তাপসের এই দলবদল।
কেন দল বদলালেন? কিছুটা কৈফিয়তের সুরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন বিধায়ক তাপস রায়ের দাবি, “এই সরকার হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট কাউকে মানে না। এরা আসলে শেখ শাহজাহানদের সরকার। তাই বাধ্য হয়েই দলবদল।”
শুধু এখানেই না থেমে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের ‘অমানবিক’, ‘জলদস্যুদের সঙ্গেও তুলনা করেছেন তাপস।
আর তাপসকে সাদরে গ্রহণ করতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “তাপস রায়ের মতো দক্ষ, স্বচ্ছ রাজনীতিবিদের কাছে আমরা শিশু। উনি বিজেপিতে আসায় উত্তর কলকাতায় আমরা সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হলাম।”
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বলেন, “উত্তরবঙ্গ, জঙ্গলমহল, এমনকী বনগাঁ-সর্বত্র আমরা শক্তিশালী হলেও কলকাতায় আমাদের সাংগঠনিক ঘাটতি ছিল। তাপস রায় আমাদের কাছে অভিভাবকের মতো।”
তাপসের দলত্যাগের প্রসঙ্গে আরও একটি নাম উঠে এসেছে। তিনি কলকাতা উত্তরের বিধায়ক সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে তাপসের সম্পর্ক ভাল ছিল না। দলত্যাগের ঘোষণার সময়েই তাপস জানান, তাঁর বাড়িতে ইডি হানার নেপথ্যে সুদীপের হাত রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র মারফত খবর, বিজেপি কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে এ বার তাপসকে প্রার্থী করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ সুদীপের বিরুদ্ধে তাপসের লড়াই দেখতে পাবে বাংলা।