দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ ২৪ ঘণ্টা কাটল না। তার মধ্যেই লোকাল ট্রেন নিয়ে সিদ্ধান্ত বদল হয়ে গেল।
রাজ্য সরকার রবিবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, ৩ জানুয়ারি সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৭টার পরে লোকাল চলবে না। এ নিয়ে যাত্রী থেকে রেল, সকলেই বিভ্রান্তিতে ছিলেন। পূর্ব রেল জানিয়েছিল, সন্ধ্যা ৭টায় দিনের শেষ লোকাল ট্রেন ছাড়বে। অন্য দিকে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের বক্তব্য ছিল, ৭টার মধ্যে সব লোকাল ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছবে। আর সেই আবহেই সোমবার সন্ধ্যায় নবান্নের এক নির্দেশিকায় সমস্তটা স্পষ্ট করে দেওয়া হল। জানিয়ে দেওয়া হল, সোমবার থেকে সন্ধ্যা ৭টা নয়, রাত ১০টাতেই ছাড়বে শেষ লোকাল।
রবিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানিয়েছিলেন, সন্ধে সাতটা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে। তা নিয়ে বিস্তর ধন্দ তৈরি হয়? অনেকেই বোঝেননি, সন্ধে সাতটা মানে কী? ট্রেন ছাড়ার শেষ সময় নাকি ট্রেন চলাচল তারপর আর হবে না। তা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় ব্যাখ্যা দিতে হয় রেলকে। কিন্তু বিকেলে নবান্ন জানাল, আরও তিন ঘণ্টা সময় বাড়ানো হল শেষ ট্রেন ছাড়ার।
রেলের সময় নিয়ে এদিন সকাল থেকে হাওড়া, শিয়ালদহ, বিধাননগরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। দেখা গেল তারপরেই নড়েচড়ে বসল নবান্ন।
অতীতেও কোভিড বিধি একবার জারি করে তা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বদল করার ঘটনা ঘটেছে বাংলায়। ২০২০ সালের অগস্ট মাসে বিক্ষিপ্ত ভাবে লকডাউন করা নিয়ে চার ঘণ্টায় তিনবার দিন বদল করেছিল নবান্ন। এবার দেখা গেল লোকাল ট্রেনের সময় নিয়ে ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সিদ্ধান্ত বদল করল রাজ্য সরকার।
বিধি-নিষেধ চালুর প্রথম দিনেই ভিড় ট্রেন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন এক মহিলা রেলযাত্রী। বারুইপুর স্টেশন ছাড়ার পর ডায়মন্ডহারবার ডাউন লোকাল ট্রেন থেকে পড়ে যান মধ্যবয়সী এক মহিলা রেলযাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে ট্রেনের গেটের কাছে ঝুলছিলেন তিনি। আচমকাই চলন্ত ট্রেন থেকে রেল লাইনে পড়ে যান তিনি। দেখতে পেয়ে ছুটে যান স্থানীয় যুবকরা। তাঁরাই গুরুতর জখম মহিলাকে উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসা শুরু হয়েছে আহত রেলযাত্রীর।
অতীতে লকডাউনের মধ্যে ‘স্টাফ স্পেশাল’ লোকাল ট্রেন চালিয়েছিল রেল। এ বারেও কি সেই ব্যবস্থা থাকবে? থাকলে কারা উঠতে পারবেন সেই ট্রেনে? এমন নানা প্রশ্ন উঠেছে যাত্রীদের মধ্যে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের যে ঘোষণা তাতে কোনও প্রান্তিক স্টেশন থেকে ১০টার পরে আর টাইম টেবল মেনে লোকাল ট্রেন যাত্রা শুরু করবে না।
তবে রেলের কর্মীরা যাতে বাড়ি ফিরতে পারেন বা কাজে যোগ দিতে পারেন তার জন্য বিশেষ কিছু ট্রেন চালানো হবে। তবে সেই ট্রেনগুলিতে রেলকর্মীদের পাশাপাশি অন্যন্য জরুরি পরিষেবায় যুক্তরা সফর করতে পারবেন কি না সে ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। জরুরি পরিষেবার মধ্যে কোন কোন ক্ষেত্র যুক্ত হবে তা নিয়েও আলাপ আলোচনার পরেই রেলের পক্ষে ঘোষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
সব মিলয়ে রেলের উপর চাপ বাড়ছিল। চাপ বাড়ছি রাজ্য সরকারের উপরও। শেষ পর্যন্ত মতবদল করল নবান্ন।