দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পঞ্চম পশুখাদ্য মামলাতেও দোষী সাব্যস্ত হলেন লালুপ্রসাদ যাদব। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় বিপাকে লালু প্রসাদ যাদব। মঙ্গলবার ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন আরজেডি সুপ্রিমো লালু প্রসাদ যাদব। ওই কেলেঙ্কারির পঞ্চম এবং অন্তিম মামলাতে লালু সহ ৭৫ জন দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাঁচির সি বি আই কোর্টে ওই মামলার রায়দান ছিল। কোর্টরুমে হাজির ছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনই বিচারপতি এস কে শশী লালুকে দোষীর আখ্যা দেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত ২৪ জনকে রেহাইও দেওয়া হয় এদিন। যাঁর মধ্যে ছ’ জন মহিলাও ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রমাণ না মেলায় বেকসুর খালাস করা হয় তাঁদের। আদালতের রায় অনুযায়ী, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হবে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে।
ডোরান্ডা ট্রেজারি কেস নামে পরিচিত ওই মামলাটি।
বেআইনিভাবে ওই ট্রেজারি থেকে ১৩৯.৩৫ কোটি টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বলা চলে, ভারতের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির মধ্যে এটি অন্যতম। মোট চারটি খাত থেকে টাকা তোলার অভিযোগ ছিল লালুর বিরুদ্ধে। চায়বাসা ট্রেজারি থেকে ৩৭.৭ কোটি এবং ৩৩.১৩ কোটি, দেওঘর ট্রেজারি থেকে ৮৯.২৭ কোটি এবং দুমকা ট্রেজারি থেকে ৩.৭৬ কোটি তুলেছিলেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ। সাড়ে তিন বছর জেলও খেটেছেন তিনি। তবে হালে দুমকা, দেওঘর, চায়বাসা ট্রেজারির চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন লালু প্রসাদ।
ডোরান্ড মামলার ক্ষেত্রে লালু সহ বাকিদের বিরুদ্ধে ১৭০ পৃষ্ঠার চার্জশিট জমা দিয়েছিল সিবিআই । লালু প্রসাদ ছাড়াও প্রাক্তন সাংসদ জগদীশ শর্মা, PAC চেয়ারম্যান ধ্রুব ভগৎ, প্রাণীপালন দফতরের সচিব বেক জুলিয়াস, প্রাণীপালন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ড. কে এম প্রসাদ ওই মামলার প্রধান অভিযুক্ত। পশুখাদ্য মামলায় মোট ৯৯ জনের নাম জড়িয়েছিল। তবে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ড. জগন্নাথ মিশ্র সহ ৫৫ জন অভিযুক্ত মারা গিয়েছেন। বাকিদের মধ্যে সাত জন রাজসাক্ষী হয়ে গিয়েছেন। দু’ জন যাবতীয় অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। ছ’ জন পলাতক ৷
লালু প্রসাদ যাদব যে ৯৫০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের সঙ্গে যুক্ত সে বিষয়টি ১৯৯৬ সালে সামনে আসে। প্রাণীপালন দফতরে আচমকা অভিযান চালানোয় তা ধরা পড়ে। প্রাথমিকভাবে লালু প্রসাদ যাদব এবং জগন্নাথ মিশ্রর বিরুদ্ধে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির মামলা দায়ের হয়।
এদিন জেডিইউ নেতা নীরজ কুমার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এটাই তো ভবিতব্য। এটাই হওয়ার কথা ছিল। উনি (লালু প্রসাদ যাদব) এবং ওঁর পরিবার আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আদালত ন্যায় করেছেন।”
এর আগের চারবার আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন লালু, এবারও সেই পথেই হাঁটবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে জেল খেটেছেন ৭৩ বছর বয়সি নেতাটি। তবে তার বেশিরভাগ সময়টাই অসুস্থ হয়ে রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স কেটেছে। গত জানুয়ারিতে শরীর আরও খারাপ হওয়ায় দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। তবে নতুন মামলায় যদি ৩ বছরের বেশি কারাবাস হয় তবে ফের জেলে ফিরতে হবে লালুকে।