ফের হাসপাতালে ভর্তি প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবাণী । বুধবার রাতে তাঁকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অসুস্থতার কারণ সঠিকভাবে জানা না গেলেও, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন,
এই নিয়ে এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি করানো হল তাঁকে।
গত সপ্তাহেই দিল্লির এইমসে ভর্তি করানো হয়েছিল প্রবীণ নেতা তথা দেশের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদবাণীকে। সেই সময়ে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছিল, বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসুস্থতার কারণেই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে আদবাণীকে। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। কিন্তু বাড়ি ফেরার একদিনের মধ্যেই ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি। ফের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল লালকৃষ্ণ আদবাণীকে।
উল্লেখ্য, গত ১০ দিনের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি করতে হল লালকৃষ্ণ আডবানিকে। গত মাসের ২৭ তারিখই তাঁকে দিল্লির AIIMS হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছিল। ছ’দিনের মধ্যে ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কোনওরকম ঝুঁকি নিতে রাজি হয়নি পরিবার তথা ভারতীয় জনতা পার্টি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে লালকৃষ্ণ আডবানির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। নিউরোলজি বা স্নায়ু বিষয়ক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। একাধিক মেডিক্যাল টেস্ট করা হচ্ছে তাঁর। পরিস্থিতি দেখে তবেই হেলথ বুলেটিন দেওয়া হবে হাসপাতালের পক্ষ থেকে।
৯৬ বছর বয়সী লালকৃষ্ণ আডবানি বয়সজনিত কারণে সমস্যায় ভুগছেন। বাড়িতেও বিভিন্ন সময় তাঁর মেডিক্যাল চেক আপ হয়। কিন্তু, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকায় তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এর আগে গত ২৬ জুন তাঁকে ইউরিন ইনফেকশনের কারণে দিল্লির AIIMS হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
চলতি বছরের শুরু থেকেই বেশ অসুস্থ ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ বছরই তাঁকে ভারতরত্ন সম্মানে ভূষিত করা হয়। দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন তিনি।
বর্ষীয়ান এই নেতার শারীরিক অবস্থার কথা ভেবেই তাঁর বাসভবনে গিয়ে ভারতরত্ন সম্মান তুলে দেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সহ অন্যরা। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরও লালকৃষ্ণ আডবানির বাসভবনে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নয়া ইনিংসের জন্য আশীর্বাদ চেয়ে নেন বর্ষীয়ান BJP নেতার থেকে। তাঁর বাসভবনে যান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও।
উল্লেখ্য, রামজন্মভূমি আন্দোলনের প্রধান মুখ ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবানি। তাঁর হাত ধরেই দেশব্যাপী শক্তি বৃদ্ধি করেছিল BJP। অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারের আমলে তিনি উপ প্রধানমন্ত্রীর পদে বসেছিলেন।
১৯২৭ সালের ৮ নভেম্বর পাকিস্তানের করাচিতে জন্ম লালকৃষ্ণ আডবানির। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি BJP সভাপতি পদে ছিলেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপ প্রধানমন্ত্রীওর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। প্রায় তিন দশকের লম্বা রাজনৈতিক কেরিয়ারে বহু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। লোকসভায় সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিরোধী দলনেতাও ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবানি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাপোলো হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডঃ বিনীত সুরীর অধীনেই ভর্তি করানো হয়েছে লালকৃষ্ণ আদবাণীকে। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে। নিউরোলজি ছাড়াও ইউরোলজি, কার্ডিওলজি ও গেরিয়াট্রিক মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ৯৬ বছরের প্রবীণ নেতার শারীরিক অবস্থার উপরে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন।