দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা: পার্থ ইস্যুতে বিস্ফোরক তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পার্থকে দলের সমস্ত পদ থেকে সরানোর দাবি তুলে টুইট করলেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, পার্থকে দলের সমস্ত পদ থেকে সরানো হোক। মন্ত্রিত্ব থেকেও সরানো হোক পার্থকে। তিনি আরও লিখেছেন, “যদি আমি ভুল বলে থাকি, আমাকে সরানো হোক।” তবে তারপরও তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিক হিসাবে কাজ করবেন বলেও টুইটে লিখেছেন।
Partha Chatterjee should be removed from ministry and all party posts immediately. He should be expelled.
— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) July 28, 2022
If this statement considered wrong, party has every right to remove me from all posts. I shall continue as a soldier of @AITCofficial.
কুণাল তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র। তিনিই প্রকাশ্যে দাবি তুললেন দলের মহাসচিবকে বহিষ্কারের। অনেকের মতে, সব মিলিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কাণ্ডে তৃণমূল যে আড়াআড়ি বিভক্ত তা স্পষ্ট হয়ে গেল কুণালের এই টুইটে।
তা ছাড়া বৃহস্পতিবার দুপুরে নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক রয়েছে। কুণালের এই টুইটের পর কৌতূহল আরও দৃঢ় হচ্ছে, আজকেই কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভা থেকে ছেঁটে ফেলবেন পার্থকে?
কুণাল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, তাঁকে যখন সারদা কাণ্ডে বিনা দোষে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ তখন তিনি কথা বলতে চাইলেও পারতেন না। পুলিশ বাধা দিত। আজকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় সামনে মিডিয়ার বুম পেলেও বলছেন না যে, তিনি নির্দোষ।
ঘটনা হল, সেই সময়ে কুণালকে দল থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য সাসপেন্ড করার কথা সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করেছিলেন পার্থ। আর এদিন সেই পার্থ যখন ইডি হেফাজতে তখন কুণাল দাবি তুললেন পার্থকে বহিষ্কারের। এখন দেখার পার্থ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল ও মন্ত্রিসভা। নাকি আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করার জন্য কুণালকেই শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে সাংগঠনিক স্তরে দোষী সাব্যস্ত হতে হয়!
রাজনৈতিক মহল দাবি করছে, কুণাল ঘোষ যে দাবি করছেন, সেটা কেবল কুণালের বক্তব্য নয়, এটা তৃণমূলেরই বক্তব্য। মুখপাত্র হিসাবে তিনি এই দাবি করছেন। প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর দলের একটা প্রভাবশালী মগল থেকে একই দাবি উঠেছিল। সে সময় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে ২৮ কোটিরও বেশি টাকা উদ্ধারের পর তৃণমূল কড়া অবস্থান নিচ্ছে। অন্তত তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্তব্য অনুযায়ী, ‘বিষয়টি উদ্বেগের, লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাওয়ার মতো…’ ৷
কুণাল ঘোষের বক্তব্য ছিল, সংবাদমাধ্যমের সামনে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য করার সুযোগ ছিল। কিন্তু তিনি কখনই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেননি। তারপরই দেখা যায়, কুণাল ঘোষ অবিলম্বে পার্থকে দল ও মন্ত্রিত্ব থেকে বহিষ্কার করার দাবি তুলে টুইট করলেন।
স্বাভাবিকভাবেই বিশ্লেষকরা বলছেন, দল যে পার্থর সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে, তা তৃণমূল মুখপাত্র কুণালের টুইটেই স্পষ্ট।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই মন্ত্রিসভার ক্যাবিনেট বৈঠক রয়েছে। পার্থ ইস্যুতে যে মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সে জল্পনা আগেই প্রশাসনিক অন্দরে জোরাল হয়েছিল।
সঙ্গে আবার এদিনই রয়েছে শিল্প দফতরের পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠক। সেটিও হচ্ছে বর্তমান শিল্পমন্ত্রীকে ব্যতি রেখেই। মনে করা হচ্ছে, শিল্প দফতরের দায়িত্ব হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতেই রাখবেন। পরিষদীয় দফতর হয়তো অন্য কারোর হাতে আপাতত দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের৷