আজ জন্মাষ্টমী।কলকাতার ইসকন মন্দিরে প্রভু শ্রী কৃষ্ণের আরাধনা শুরু হয়ে গেল। ছবি-ধ্রুবহালদার
পিয়ালী মুখার্জি : সারা দেশের পাশাপাশি কলকাতাতেও পালিত হচ্ছে জন্মাষ্টমীJanmashtami কলকাতার ইসকন মন্দিরে সাজসাজ রব। বৈষ্ণব মতে অধিবাসের পর কীর্তন, ভজন ও ভোগারতি হয়। বহু ভক্তের সমাগম হয় মন্দির প্রাঙ্গণে।
ইসকন মন্দির সূনত্রে জানাগেছে,, শুক্রবার সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মহাসমারোহে জন্মাষ্টমী পালন করা হবে। শনিবার হবে নন্দমহৎসব। কলকাতার পার্শ্ববর্তী জেলা ও দেশ-বিদেশের ভক্তরা আসবেন। পাশাপাশি এবছর ইসকন মন্দিরে জন্মাষ্টমী উৎসবে সব ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হবে। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে ইসকন মন্দির নতুন সাজে সেজে উঠেছে।
জন্মাষ্টমী সম্পর্কে রইল আরও কিছু তথ্য:
হিন্দু শাস্ত্রমতে, ভাদ্র মাসে কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দ্বাপর যুগের শেষ দিকে মথুরা নগরীতে তাঁর জন্ম হয়েছিল। সেই সময় আসুরিক ও পাশবিক শক্তি পৃথিবীকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল। তা থেকে মানবজাতিকে রক্ষা করতেই জন্ম হয়েছিল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের।
অনেকে একে বলেন কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী অথবা শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী। প্রতিবছর মধ্য আগস্ট থেকে মধ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে জন্মাষ্টমী পালিত হয়।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন দেবকী ও বাসুদেবের অষ্টম সন্তান। পণ্ডিতদের একাংশের মতে তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৩২২৮ সালের ১৮ জুলাই জন্মেছিলেন।
মৃত্যু হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩১০২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। মথুরার যাদববংশের বৃষ্ণি গোত্রের সন্তান ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে জন্মাষ্টমী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্সব। নানা ভাবে এই উত্সব পালিত হয়। কোথাও তাঁর জীবনের নানা কাণ্ড গান, কীর্তন, গীতিনাট্য, নাটক, যাত্রায় অর্থাত্ রাসলীলার মাধ্যমে পালিত হয়। যার আধিক্য দেখা যায় মথুরা, বৃন্দাবন, মণিপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায়।
আবার কোথাও দহি হান্ডি প্রথা অনুযায়ী, অনেক উঁচুতে মাখনের হাড়ি রাখা হয়। অনেকে মিলে সেখানে পিরামিড তৈরি করে হাড়ি ভাঙে। তামিলনাড়ুতে একে বলা হয় উড়িয়াদি। কেউ কেউ আবার তাঁর ছোট মূর্তি স্নান করিয়ে কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দোলনায় সাজিয়ে দেন। অনেক বাড়ির মহিলারা আবার দরজার বাইরে শ্রীকৃষ্ণের পদচিহ্ন এঁকে দেন। যাকে শ্রীকৃষ্ণের যাত্রা বলা হয়। কেউ কেউ আবার শ্রীকৃষ্ণের জন্ম উপলক্ষে নন্দের উপহার বিতরণের কাহিনী অনুযায়ী নন্দোত্সব পালন করেন।
এবছর পঞ্জিকা অনুযায়ী ২ ভাদ্র, ১৯ আগষ্ট শুক্রবার, ২০২২-এ জন্মাষ্টমীর দিন পড়েছে। পরমেশ্বর ভগবানের আবির্ভাব উপলক্ষে ভক্তদের অনেকে মধ্যরাত্রি পর্যন্ত নির্জলা উপবাস ব্রত পালন করেন। রাত ১২টার পর পুজো দিয়ে প্রসাদ নেন। পরদিন সকালে সূর্যোদয়ের পর পারণ শুরু করেন। এইভাবে যাঁরা জন্মাষ্টমী পালন করেন, তাঁরা জন্মাষ্টমীর আগের দিন নিরামিষ অন্ন খেয়ে সংযম করেন। পরের দিন প্রাতঃকালে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে তিলক ও নতুন বস্ত্র পরে ভগবানের চরণে ফুল নিবেদন করেন।