Kolkata Doctor Rape and Murder ‘পর্নোগ্রাফি’র নেশা! তিলোত্তমার উপর তীক্ষ্ণ নজর রেখেছিল অভিযুক্ত ! ঘটনার প্রতি মুহূর্তের বর্ণনা ‘অবলীলায়’ দিয়েছেন ধৃত, ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়

0
303

দেশের সময় , কলকাতা: অভিযুক্তের মোবাইল থেকে পর্নোগ্রাফির বহু ভিডিয়ো পাওয়া গিয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, তিনি শুধু পর্নোগ্রাফি নয়, ‘বিকৃত’ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। ঘটনার প্রতি মুহূর্তের বর্ণনা দিয়েছেন গোয়েন্দাদের কাছে।

আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায় কি নির্যাতিতাকে আগে থেকে চিনত? এই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, সিবিআই তদন্ত থেকে জানা গেছে, ঘটনার আগের দিন তাঁর ওপর ‘নজর’ রাখছিল সে। হাসপাতালের করিডরের সিসি ক্যামেরায় এই ছবি ধরা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। আগে সঞ্জয় যখন কলকাতা পুলিশের হেফাজতে ছিল তখন সে এই ‘নজর’ রাখার বিষয়টি স্বীকার করেছিল বলেও জানা গেছে।

শিকার ধরার আগে, বাঘ যেভাবে আড়াল থেকে শিকারের উপর নজর রাখে, অনেকটা সেই রকম। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রশিক্ষণাধীন মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগের মামলার তদন্তে সিবিআই-এর তদন্তকারীদের হাতে এসেছে বলে জানা গেছে সূত্রমার ফত  । গা শিরশিরে এক সিসিটিভি ফুটেজ। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, অপরাধের কয়েক ঘণ্টা আগে তিলোত্তমার খুব কাছেই ছিল অভিযুক্ত সিভিক ভলন্টিয়র। সিবিআই-এর এক সূতকে উদ্ধৃত করে সিএনএ-নিউজ১৮ জানিয়েছে, ওই সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, অপরাধের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ৩৩ বছরের অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার, খুব কাছ থেকে নজর রাখছিলেন তিলোত্তমার উপর। সিসিটিভি ফুটেজে তিলোত্তমার দিকে ভয়ঙ্কর নজরে তাকিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অভিযুক্তকে।

যে সিসিটিভি ফুটেজের কথা বলা হচ্ছে তাতে নাকি দেখা গেছে, ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ৮ তারিখ সঞ্জয় রায় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে নির্যাতিতার ওপর ‘নজর’ রাখছিল। ওই দিন বেলা ১১টার সময় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে ছিল সঞ্জয়। সেই সময় সেখানে নির্যাতিতা ছাড়াও আরও ৪ জন জুনিয়র ডাক্তার ছিলেন। সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে, সঞ্জয় তাঁদের দিকে ‘হাঁ করে’ তাকিয়ে ছিল। তার পরের দিনই ভোর রাতে ওই নৃশংস ঘটনা ঘটায় সঞ্জয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিবিআই-এর জেরার মুখে নিজের অপরাধ স্বীকারও করে নিয়েছে ধৃত অভিযুক্ত। সে আরও জানিয়েছে, হামলার আগে, ৮ অগস্ট টেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে ৩১ বছর বয়সী তিলোত্তমার উপর নজর রেখেছিল সে। সিসিটিভি ফুটেজে তার এই দাবি সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিরয়ের ‘যৌন বিকৃতি’ আছে এবং তার প্রবৃত্তি ‘পশু-সদৃশ’ বলে জানিয়েছে সিবিআই-এর ওই সূত্র। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, যে ঘটনায় গোটা দেশ হতবাক, ক্ষুব্ধ, সেই ঘটনা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ধৃতর মধ্যে কোন অনুশোচনা দেখা যায়নি।

সিসিটিভি ফুটেজ এবং ছেঁড়া ব্লু-টুথ হেডফোনের সূত্র ধরেই তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ঘটনার দিন রাত আড়াইটে থেকে ৩টে নাগাদ সঞ্জয়কে সেমিনার রুমে ঢুকতে দেখা গেছিল। তার অন্তত ৪৫ মিনিট পর সে বেরিয়ে আসে। পরে মৃত চিকিত্‍সক-পড়ুয়ার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, তাঁর মাথা, মুখ, ঠোঁট, চোখ, ঘাড়, হাত, যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষত রয়েছে। অর্থাৎ পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়েছিল তাঁর ওপর। শারীরিক এবং যৌন নির্যাতন করেছিল সঞ্জয় তা স্পষ্ট।

পলিগ্রাফ টেস্ট এখনও করা হয়নি আরজি কর মামলায় অভিযুক্ত ও ধৃত সঞ্জয় রায়ের। তবে দফায় দফায় তার মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়নে যা সামনে এসেছে, তাতে চমকে উঠছেন তদন্তকারীরা। সঞ্জয় রায় অপরাধ করেছে কিনা তা তদন্তসাপেক্ষ, কিন্তু সে যে বিকৃত যৌনতায় আক্রান্ত অর্থাৎ ‘সেক্সুয়ালি পারভার্টেড’, তাতে কোনও সন্দেহ নেই বলেই সিবিআই সূত্রের খবর। 

নিহত চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে যে ভয়াবহ আঘাত ও অত্যাচারের বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া গেছে, তা ভাল করে খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা। তা দেখে মনে করা হয়েছে, ধর্ষক যে বা যারাই ছিল, সে বা তারা ‘হিংস্র জন্তুর মতো প্রবৃত্তি’তে আক্রান্ত। এই প্রবৃত্তি পুরোপুরি ধরা পড়েছে সঞ্জয় রায়ের সাইকোমেট্রি টেস্টেও।

ঘটনার পর থেকেই সঞ্জয় সম্পর্কে যে সব তথ্য সামনে এসেছে, ঘটনার রাতে তার যা যা কাজকর্মের কথা জানা গেছে, তাতে এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই, যে সে সুস্থ মানসিকতার অধিকারী নয়। জানা গেছে ঘটনার রাতে একটি নয়, পরপর দু’টি যৌনপল্লিতে গিয়েছিল সঞ্জয় রায়। দু’জায়গাতেই ঝামেলা করার পরে আরজি কর হাসপাতালে ঢোকে সে। তার পরেই সকালে উদ্ধার হয় তরুণী চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ। 

পুলিশ সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, ধৃত সে রাতে যৌনপল্লিতে গিয়েছিলেন। মদও খেয়েছিলেন। তাঁর মোবাইল ভর্তি ছিল পর্নোগ্রাফির ভিডিয়ো। পুলিশের কাছেও অপরাধের কথা ‘অবলীলায়’ তিনি স্বীকার করেছিলেন। এ বার সিবিআই কর্তাও একই কথা জানালেন। ধৃতের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করে আরও কিছু বিষয়ে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হতে চাইছেন।

এদিকে, এই ঘটনার বিষয়ে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর জন্য একটি জাতীয় টাস্ক ফোর্সও গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবারের পর, বৃহস্পতিবারও চিকিৎসকদের কর্মবরতিতে ইতি টেনে কাজে ফেরার আবেদন করেছিল। আদালত আরও আশ্বাস দিয়েছে, আন্দোলন করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রতিকূল ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। সুপ্রিম কোর্টের এই আবেদনের পর, দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এর ডাক্তাররা তাদের ১১ দিনের ধর্মঘট শেষ করেছেন এবং আবার কাজ শুরু করেছেন। রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, আদালতের আশ্বাসে তারা কাজেফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, কর্মবিরতির পথ থেকে এখনই সরছে না পশ্চিমবঙ্গের জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন, জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট। তারা জানিয়েছে, তদন্তের গতিপ্রকৃতি ইতিবাচক না হ‌ওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি জারি থাকবে তাদের।

Previous articleBangladesh flood ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশ, ‘ভারত দায়ী’ এমন অভিযোগ নস্যাৎ ভারতের বিদেশমন্ত্রক ও হাইকমিশনারের
Next articleFashion Time: Editor’s Choice Photo of the week

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here