দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্র নিবাস থেকে কলকাতার নতুন মেয়রের নাম ঘোষণা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য কলকাতার মহানাগরিক হলেন ফিরহাদ হাকিম। পাশাপাশি পুরসভার দলনেতার দায়িত্বও সামলাবেন ফিরহাদ। পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকছেন মালা রায়। ডেপুটি মেয়র হলেন অতীন ঘোষ। এর আগেও এই দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
১৩ জন মেয়র পারিষদ হলেন অতীন ঘোষ, দেবাশিস কুমার, দেবব্রত মজুমদার, সন্দীপ রঞ্জন বক্সি, আমিরুদ্দিন ববি, সন্দীপন সাহা, জীবন সাহা, রাম পেয়ারে রাম, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, তারক সিং, মিতালী বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, স্বপন সমাদ্দার।
কলকাতার মহানাগরিক পদে বসেই ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘জীবন যদি যায় যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসকে ভঙ্গ হতে দেব না। তাঁর আদর্শ, বিশ্বাস নিয়েই এতদিন পুরবোর্ড চলেছে। এরপরও চলবে। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে হেঁটে আমরা শুধু কাজ করে যাব। আমৃত্যু ওনার বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে উনি যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করব।’
একই সঙ্গে ১৬টি বরোর চেয়ারম্যানের নামও এদিন ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ১ নম্বর বরো কমিটির দায়িত্বে তরুণ সাহা, ২ বরো সামলাবেন শুক্লা ভড়, ৩ বরো অনিন্দ্যকিশোর রাউত, ৪ বরোয় সাধনা বোস, ৫ বরো রেহানা খাতুন, ৬ বরো সানা আহমেদ, ৭ বরো সুস্মিতা ভট্টাচার্য, ৮ বরো চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, ৯ বরো দেবলীনা , ১০ বরো জুঁই বিশ্বাস, ১১ বরো তারকেশ্বর চক্রবর্তী, ১২ বরো সুশান্ত ঘোষ, ১৩ রত্না শূর, ১৪ বরো সংহিতা দাস, ১৫ বরো রঞ্জিত শীল, ১৬ বরো সুদীপ পোল্লে।
দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র ভবনে দলের নেতাদের সঙ্গে ওই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিলেন, ”এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ভারতে কোথাও করে দেখাতে পারবেন না। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য়। যত জিতব, তত নম্র হবে। অহংকারের জায়গা তৃণমূলে নেই।”
এদিন মহারাষ্ট্র নিবাসে বক্তৃতায় তৃণমূলের জয়ী কাউন্সিলরদের পাশাপাশি অন্য দলের জয়ী কাউন্সিলরদেরও অভিনন্দন জানান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি এদিন আরও বলেন, ”সবাইকে হয়তো জায়গা দিতে পারব না। ৪০ জন নতুন মুখ এসেছে। তাদের সবাইকে ভালো করে কাজ শিখতে হবে। মনে রাখবেন ভালো কাজ করলে মানুষ প্রশংসা করবে। খারাপ কাজ করলে ভুল বার্তা যাবে। আজ থেকেই এলাকা ক্লিন করতে শুরু করবেন। যদিও আপনাদের শপথ এখনও হয়নি। সব হোর্ডিং, পোস্টার খুলে ফেলতে হবে। এর পর রাস্তা ক্লিয়ার, রং করা, নিকাশি দেখা, ডেঙ্গু সব বিষয়ে দেখতে হবে। আগামী ৬ মাস বাদেই রিপোর্ট কার্ড নেব।”
কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ”রাস্তায় এদিক ওদিক চেয়ে যাবেন। কোথায় লাইট নেই, কোথায় রাস্তা খারাপ দেখবেন। পিচের ওপর পিচ তুলে মাঝেরহাট সেতু গেছে। টাকা এত সস্তা নয়। কথা কম, কাজ বেশি করবেন। দল এখন অনেক কঠোর। সবাইকে সব দেওয়া যায় না। ৪২% মহিলা প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূলের সম্পর্ক আসলে মাটির সঙ্গে। দল যখন তৈরি করেছিলাম তখন থেকেই মা মাটি মানুষের কথা বলেছি।”
এদিনের বৈঠকে ফের প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ”সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে খুব মিস করছি। তিনি যখন মেয়র হলেন, সেই বার বোর্ড গঠন করতে নিজাম প্যালেসে কাউন্সিলরদের তিনদিন রাখতে হয়েছিল। যাতে ছিনিয়ে না নেয়। আজ মিস করছি সুব্রত দা’কে। গ্রেট লস সুব্রত দার চলে যাওয়া আমাদের কাছে।”